আগরতলা, ৮ জুলাই : বন্যা এবং ভূমিধস প্রতিরোধে আগামীকাল সমগ্র রাজ্যে মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। বিপর্যয় মোকাবিলার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নেবে। এই মহড়ার চূড়ান্ত প্রস্তুতি হিসেবে মঙ্গলবার ত্রিপুরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (টি.ডি.এম.এ.) সচিবালয়ের ২ নং কনফারেন্স হলে টেবিল টক এক্সারসাইজের আয়োজন করে। রাজ্যে বিপর্যয় মোকাবিলার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে সমন্বয় সাধনের উপর এই এক্সারসাইজে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়। রাজ্যে বর্ষার সময় যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা যে নির্দেশ দিয়েছেন তা বাস্তবায়নে যাতে কোনও সমস্যা না হয় টেবিল টক এক্সারসাইজে সে বিষয়ে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা হয়।
মুখ্যসচিব জে. কে. সিনহা, রাজস্ব সচিব ব্রিজেশ পান্ডে, পূর্ত এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে এই এক্সারসাইজে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও সেনা, আসাম রাইফেলস, বি.এস.এফ, সি.আর.পি.এফ., এন.ডি.আর.এফ, এস.ডি.আর.এফ.-এর প্রতিনিধিগণ এবং বিপর্যয় মোকাবিলার সঙ্গে যুক্ত রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন। জেলাশাসক ও সমাহর্তাগণ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই এক্সারসাইজে যুক্ত হন। এক্সারসাইজের প্রারম্ভিক বক্তব্যে মুখ্যসচিব জে. কে. সিনহা এই ধরনের মহড়ার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন এবং বিপর্যয় মোকাবিলার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয় সাধনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, শুধুমাত্র ভুল ত্রুটি ধরে দেওয়ার জন্য নয়, প্রকৃত অর্থেই বিপর্যয় মোকাবিলার সময় যাতে দায়িত্বশীল ভূমিকা গ্রহণ করা যায় সেই লক্ষ্যে এই ধরনের মহড়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।
বিপর্যয় মোকাবিলার সময় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী যে সমস্ত পদক্ষেপ নেবে তার একটা প্রস্তুতি জেলাশাসকগণ বৈঠকে তুলে ধরেন। সেনা, আধাসামরিক বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির (এন.জি.ও.) মধ্যে অধিকতর সমন্বয় সাধনের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের প্রধান পরামর্শদাতা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সুধীর বহেল বৈঠকটি পরিচালনা করেন। তিনি বিভিন্ন প্রকার বন্যা এবং ভূমিধসের সম্ভাব্য পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে অংশগ্রহণকারীদের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন।
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এন.ডি.এম.এ.) পক্ষে এর সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল সৈয়দ আতা হাসনাইন নয়াদিল্লি থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই এক্সারসাইজে অংশ নেন। তিনি বিপর্যয় মোকাবিলার প্রস্তুতিতে এই ধরনের আয়োজন করার জন্য সার্বিকভাবে ত্রিপুরা সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি এই মনোভাব বজায় রেখে বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে প্রস্তুতি বজায় রাখার পরামর্শ দেন। ঝুঁকি প্রশমনে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ১০ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।
আগামীকাল সমগ্র রাজ্যে প্রায় ৬০টি জায়গায় এই মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। বন্যা, ভূমিধুসের মোকাবিলা এবং স্পর্শকাতর এলাকাগুলি থেকে স্থানীয় অধিবাসীদের সরিয়ে নেওয়ার উপর এই মহড়ায় প্রাধান্য দেওয়া হবে। টেবিল টক এক্সারসাইজে অংশ নেওয়া সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাজস্ব সচিব অযথা আতঙ্কিত না হয়ে এই মহড়া কর্মসূচিকে সফল করে তোলার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে রাজ্যের সমস্ত নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আক্ষরিক অর্থে সবার সম্মিলিত সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। রাজস্ব দপ্তরের পক্ষ থেকে এক প্রেস রিলিজে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন