আগরতলা, ০৯ জুন : বেআইনি কোনও কিছুকে প্রশ্রয় দেবে না রাজ্য সরকার। সেই জন্যই ত্রিপুরার মানুষ আমায় মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসিয়েছেন। বুধবার উত্তর জেলার চুড়াইবাড়ি চেকপোস্ট পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এই মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব । তিনি বলেন, আন্তঃরাজ্য পণ্য পরিবহনে এই চেকপোস্ট দিয়ে যেভাবে কাজকর্ম চলছে তাতে মোটেও সন্তুষ্ট নন। বেশ কয়েকটি বিষয়ে খামতি দেখা গেছে বলেও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী।
সাংবাদিকদের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই সরকার সিন্ডিকেট রাজ বা দালালচক্রকে কোনও ভাবেই ত্রিপুরার মাটিতে দাঁত ফোটাতে দেবে না। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকার নীতিগত ভাবে বদ্ধপরিকর। চুড়াইবাড়ি চেকপোস্টেরও বেশ কিছু অব্যবস্থা নজরে এসেছে। কদমতলা থানার ভূমিকাও সন্তোষজনক নয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত যে কর্মী বা আধিকারিকদের জন্য অব্যবস্থার অভিযোগ আসছে তাঁদের চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অধিকাংশ পণ্যবাহী গাড়ি চুড়াইবাড়ি দিয়ে যাতায়াত করে। প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ১০০ শতাংশ গাড়িতে চেকিং করতে হবে। তার জন্য যথাযথ ডিজিটাল ব্যবস্থা এবং স্ক্যানিং মেশিন দিয়ে চেকিংয়ের কাজ করতে হবে। যাতে নেশার সামগ্রী সহ অন্য কোনও জিনিস, যা রাজ্যের জন্য ক্ষতিকারক তা যাতে ত্রিপুরায় প্রবেশ করতে না পারে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, বেশ কিছু গাড়িকে চেক না করে সোজাপথে চলে যেতে দেওয়া হয়। এর পিছনে যে অসাধু চক্র রয়েছে তা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, পুলিশকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া আছে অবৈধ যা কিছুর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য।
মুখ্যমন্ত্রী অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, চুড়াইবাড়ি চেক পোস্টের চেকিং-সহ অন্যান্য ব্যবস্থায় কোনও ঢিলেঢালা ভাব রাজ্য সরকার বরদাস্ত করবে না। চুড়াইবাড়িতে কর্মরত যুগ্ম পরিবহণ কমিশনারের ভূমিকাও সন্তোষজনক নয়। তিনি কোনও তথ্য দিতে পারেননি। তাঁকে স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। তিনি বলেন, এদিন আমি চুড়াইবাড়ি পৌঁছনোর আগে ৯৬টি গাড়ি চেক পোস্ট দিয়ে পাস করে। একটি গাড়িরও ফাইন হয়নি বলে আমি জানতে পারি। তারপর সেখানে বসেই দাঁড়িয়ে থাকা ১৫টি গাড়ির মধ্যে চারটি গাড়িকে আমি নিজে চিহ্নিত করে সব কিছু খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিই। দেখা যায় তার মধ্যে দুটি গাড়ি যথাযথ ভাবে নিয়ম মানেনি। সেগুলি থেকে জরিমানা আদায় করা হয়। চেকপোস্টকে পুরো ক্যামেরা দিয়ে মুড়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, হেলিপ্যাড থেকে চুড়াইবাড়ি চেক পোস্ট যাওয়ার পথে রাস্তার ধারে বেশ কিছু স্টোন ক্র্যাশার চোখে পড়ে। জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছি সেগুলি বৈধ কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য। ত্রিপুরা রাজ্যে ছোট ব্যবসায়ীরা উপার্জন করুক তা আন্তরিক ভাবেই রাজ্য সরকার চায়। কিন্তু তা যাতে বেআইনি না হয়, সে ব্যাপারেও রাজ্য সরকার তৎপর। এদিনের পরিদর্শনকালে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন বিধানসভার উপাধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন সহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন