Narendra Modi : ডেন্টাল কলেজ সহ রাজ্যে ৪,৩০০ কোটি টাকারও বেশি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী - ব্রহ্মকুন্ড বার্তা Brahamakundabartaa

ব্রহ্মকুন্ড বার্তা  Brahamakundabartaa

দেশ-বিদেশ ও ত্রিপুরার সব খবরের আপডেট

Post Top Ad

Translate

Narendra Modi : ডেন্টাল কলেজ সহ রাজ্যে ৪,৩০০ কোটি টাকারও বেশি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী

Share This


 আগরতলা, ১৮ ডিসেম্বর : ত্রিপুরা শান্তি ও বিকাশের পথে এগিয়ে চলেছে। ডাবল ইঞ্জিনের যে সরকার রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার সুফল সর্বত্র পৌঁছে গেছে। রবিবার আগরতলার স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে তিনটি প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন, দুটি প্রকল্পের শিলান্যাস এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ২ লক্ষের উপর সুবিধাভোগীর গৃহ প্রবেশ অনুষ্ঠানের সূচনা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একথা বলেন। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিকাশের গতি আগামীদিনগুলিতে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরার উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কয়েক হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে। রাজ্য সরকার এগুলির যথাযথভাবে রূপায়ণ করছে। স্বচ্ছ ভারত কর্মসূচি এই রাজ্যে এখন পর্যন্ত দারুণভাবে রূপায়ণ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী রাজ্যবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর স্বচ্ছতাকে জনআন্দোলনে পরিণত করেছে। এরফলে ত্রিপুরা ছোট রাজ্যগুলির মধ্যে দেশের সবচেয়ে বড় স্বচ্ছ রাজ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। 


স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল সত্যদেও নারাইন আর্য, মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা, উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা, কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব, বিধানসভার অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তী, রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য সদস্যাগণ ও রাজ্য প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকগণ।


উল্লেখ্য, এদিন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-গ্রামীণ প্রকল্পে ১,৫১,০১৯ জন এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-আরবান প্রকল্পে ৫৪,৫২৬ জন বেনিফিসিয়ারি প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে গৃহ প্রবেশ করেছেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী  ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে আনন্দনগরে স্টেট ইনস্টিটিউট অব হোটেল ম্যানেজমেন্ট, আগরতলা গভর্নমেন্ট ডেন্টাল কলেজ এবং আগরতলা বাইপাস (খয়েরপুর-আমতলি) জাতীয় সড়ক-৮-এর প্রশস্তিকরণের কাজের উদ্বোধন করেছেন। এছাড়া তিনি পিএমজিএসওয়াই-থ্রি ২৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩২টি সড়কের এবং ৫৪২ কিলোমিটার দীর্ঘ ১১২টি সড়ক প্রকল্পের (রাজ্য ও জেলা সড়ক) শিলান্যাস করেছেন। সব মিলিয়ে আজ প্রধানমন্ত্রী ৪,৩০০ কোটি টাকারও বেশি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করেছেন।


অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরার বিকাশ যাত্রা এক নতুন মাত্রা পেয়েছে। যোগাযোগ, স্কিল ডেভেলপমেন্ট, গরীবদের নতুন ঘরে প্রবেশ করার যে প্রকল্পগুলির আজ উদ্বোধন এবং শিলান্যাস হয়েছে এগুলির জন্য রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরার প্রথম ডেন্টাল কলেজ চালু হচ্ছে। এর সুফল এই রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা পাবেন। তারা এই রাজ্যে থেকেই ডাক্তার হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ লাভ করবেন।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২ লক্ষেরও বেশি মানুষ আজ নতুন ঘরে প্রবেশ করেছেন যাদের মালিক অধিকাংশই এই রাজ্যের মা বোনেরা। এমন অনেক মা বোন আছেন যাদের নামে প্রথম সম্পত্তি মিলেছে। তিনি এই ঘরের মালিক হওয়ার জন্য অনুষ্ঠান থেকে এই রাজ্যের মা বোনদের শুভেচ্ছা জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গরীবদের ঘর পাওয়ার ক্ষেত্রে ত্রিপুরা দেশের অগ্রণী রাজ্যগুলির মধ্যে একটি। এজন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যদের ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা খুবই ভালো কাজ করছেন। এই রাজ্যে সব অংশের মানুষের মাথার উপর ছাদ মিলছে। বিমানবন্দর থেকে স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে আসার পথে রাজ্যবাসী রাস্তার দু'ধারে দাঁড়িয়ে যেভাবে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়েছেন তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিবেকানন্দ ময়দানে যে মানুষ সমবেত হয়েছেন তার ১০ গুণ বেশি লোক রাস্তার দু'ধারে দাঁড়িয়েছিলেন। এজন্য তিনি রাজ্যবাসীকে কৃতজ্ঞতা জানান।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ শিলংয়ে উত্তর পূর্বাঞ্চল পর্যদের গোল্ডেন জুবিলি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির আগামীদিনের উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অষ্টলক্ষ্মী নিয়ে কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত সাড়ে ৪ বছরে ত্রিপুরার ডাবল ইঞ্জিন সরকার দারুণ উন্নয়নমূলক কাজ করেছে। এতে আরও কিভাবে গতি বাড়ানো যায় তা নিয়েই আজকের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরায় জনজাতিদের উন্নয়নের জন্য বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। জনজাতি সম্প্রদায়ের ছোট ছোট গোষ্ঠীগুলির বিকাশের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ত্রিপুরার আনারস, বিভিন্ন সব্জি আজ বিদেশে যাচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছেন এই রাজ্যের কৃষকরা। পিএম কিষাণ প্রকল্পে ত্রিপুরার কৃষকরা ইতিমধ্যেই ৫০০ কোটি টাকারও বেশি অর্থরাশি পেয়েছেন। তিনি বলেন, রাজ্যের বর্তমান সরকার ত্রিপুরায় শিল্প স্থাপনের জন্য বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে। এই প্রয়াসের সুফল আগামীদিনগুলিতে পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা বলেন, আজকের এই ঐতিহাসিক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজ্যের জন্য একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন। ফলে আজকের দিনটি রাজ্যবাসীর জন্য নিশ্চয়ই আনন্দের দিন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে যোগাযোগ ব্যবস্থা, ঘর সহ অনেক কিছুই প্রদান করেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় রাজ্যে ৬টি জাতীয় সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে এবং নতুন আরও ৭টি জাতীয় সড়ক নির্মাণের জন্য ১০ হাজার ২২২ কোটি টাকার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এছাড়া রাজ্যে ৪টি রোপওয়ে নির্মাণের বরাদ্দও পাওয়া গেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের আন্তরিক উদ্যোগের ফলে রাজ্যে রেল যোগাযোগের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বর্তমানে রাজ্য থেকে দশ বারোটি এক্সপ্রেস ট্রেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলাচল করছে। পাশাপাশি আগরতলা রেলস্টেশনটিকে দেশের অন্যতম আধুনিক রেলওয়ে স্টেশনে পরিণত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগের ফলেই আমাদের রাজ্য দেশের অন্যতম ইন্টারনেট গেটওয়েতে পরিণত হচ্ছে। আর এই উন্নত ইন্টারনেট পরিষেবাকে কাজে লাগিয়ে রাজ্যের যুবক যুবতীরা ডিজিটাল ত্রিপুরা গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে।


মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মার্গ দর্শনে রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলি সময়ের মধ্যেই রূপায়ণ করছে। রাজ্যের প্রান্তিক এলাকার জনগণের কাছে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার গত ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ থেকে প্রতি ঘরে সুশাসন অভিযান কর্মসূচি চালু করেছে যা আগামী ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। প্রতি ঘরে সুশাসন অভিযানের অঙ্গ হিসেবে মহকুমাস্তরে, ব্লকস্তরে এবং জেলাস্তরে সুশাসন মেলারও আয়োজন করা হচ্ছে। এই মেলার মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধাও জনগণের কাছে পৌঁছানো হচ্ছে।


অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা এই দিনটিকে রাজ্যের জন্য ঐতিহাসিক বলে আখ্যায়িত করেন। রাজ্য সরকার ও রাজ্যবাসীর পক্ষ থেকে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরেই রাজ্যে সূচনা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার। সেই প্রকল্পের মাধ্যমে ঘর পেয়ে উপকৃত হয়েছেন রাজ্যবাসী। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ত্রিপুরায় এখন উন্নয়নমূলক কাজে গতি এসেছে। রাজ্যের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে। সাব্রুম পর্যন্ত ব্রডগেজ রেল পরিষেবা চালু হয়েছে। রাজ্যে জাতীয় সড়ক নির্মাণ এবং প্রশস্ত করার কাজও জোর গতিতে চলছে। রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের গুণগতমানের শিক্ষা দিতে বিদ্যাজ্যোতি স্কুল স্থাপনের কাজ চলছে। অনুষ্ঠানে তপশিলি জাতি কল্যাণমন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস, জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী প্রেম কুমার রিয়াং, বিধানসভার অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তী বক্তব্য রাখেন।



PM Gatishakti : প্রজ্ঞাভবনে পিএম গতিশক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান ফর মাল্টিমডেল কানেক্টিভিটি নিয়ে উত্তর পূর্ব আঞ্চলিক সম্মেলন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Bottom Ad