আস্তাবল ময়দানে বিজেপির নির্বাচনী সমাবেশ, ডাবল ইঞ্জিন সরকারই ত্রিপুরার উন্নয়নে দিশা দেখাতে পারে : Narendra Modi - ব্রহ্মকুন্ড বার্তা Brahamakundabartaa

ব্রহ্মকুন্ড বার্তা  Brahamakundabartaa

দেশ-বিদেশ ও ত্রিপুরার সব খবরের আপডেট

Post Top Ad

Translate

আস্তাবল ময়দানে বিজেপির নির্বাচনী সমাবেশ, ডাবল ইঞ্জিন সরকারই ত্রিপুরার উন্নয়নে দিশা দেখাতে পারে : Narendra Modi

Share This

 


আগরতলা, ১৩ ফেব্রুয়ারি : একটা সময় বামপন্থীরা ত্রিপুরার বিকাশকে বিনাশের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ত্রিপুরা রাজ্যের সরকারি দপ্তর থেকে শুরু করে থানা পুলিশ, ব্যবসা বাণিজ্য সবই ছিল সিপিএম ক্যাডারদের দখলে। লাল চিহ্ন ত্রিপুরার জন্য দুর্ভাগ্যের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেই অবস্থা থেকে ত্রিপুরার মানুষকে মুক্তি দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি নেতৃত্বাধীন সরকার। ভাজপা সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ত্রিপুরায় শান্তি ফিরেছে। বিকাশের মুখ দেখতে পাচ্ছেন ত্রিপুরার মানুষ। কমিউনিস্ট পার্টির জমানায় প্রত্যেক ভোটের আগে হিংসার পরিবেশ কায়েম থাকতো। কিন্তু এবারের নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ভাবে হতে চলেছে। এটাই ভারতীয় জনতা পার্টির দৃষ্টিভঙ্গি। সিপিএম কংগ্রেস কোন সময় ত্রিপুরার উন্নতি চায় নি। তারা হামেশাই চাইতো ত্রিপুরার মানুষ গরীব থেকে আরো গরীব হোক। আর গরীব মানুষের টাকায় নিজেদের পকেট ভারি করতো তারা। সোমবার আগরতলার স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে ভারতীয় জনতা পার্টির মনোনীত প্রার্থীদের সমর্থনে আয়োজিত বিজয় সংকল্প জন সমাবেশে এভাবেই বিরোধী শিবিরের তীব্র সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। 

            এদিন বিকেল চারটা নাগাদ জন সমাবেশ স্থলে হাজির হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। হাজারো জনতার উল্লাসের মধ্যে মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান মুখ্যমন্ত্রী, উপ মুখ্যমন্ত্রী ও প্রদেশ সভাপতি। সমাবেশে এদিন উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী পরিষদের সদস্যগণ, বিধানসভার অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তী, বিজেপির মনোনীত প্রার্থীগণ সহ দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্ব। 


              মাতা ত্রিপুরা সুন্দরীকে নত মস্তকে প্রণাম জানিয়ে বিজয় সংকল্প সমাবেশে প্রধান বক্তার ভাষণে জনতার উদ্দেশ্যে সম্বোধন শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, ত্রিপুরার আমজনতা, মা বোনেদের ভালোবাসা, আশীর্বাদ অভূতপূর্ব। নির্বাচনকে ঘিরে যেখানে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে সেখানেই মানুষের আশীর্বাদ, ভালোবাসা আপ্লুত করেছে। তাই তো আজ পুরো ত্রিপুরা বলছে - ফের একবার ভাজপা সরকার। ত্রিপুরাবাসী চাইছেন সবকা সাথ, সবকা বিকাশের সরকার। আজ বিজেপির ডাবল ইঞ্জিন সরকারের কারণে ত্রিপুরা বিকাশের লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে। আরো বিকাশ অপেক্ষা করছে। মহারাজ রাধা কিশোর মানিক্য বাহাদুর এবং গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রদর্শিত পথে এগিয়ে চলছে ত্রিপুরা। কমিউনিস্ট কংগ্রেস জমানার ভয়, ডর, হিংসার পরিবেশ চায় না ত্রিপুরাবাসী। সেই জায়গা থেকে মানুষকে মাথা উচুঁ করে বাঁচতে শিখিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। এই পার্টি ত্রিপুরার মানুষের সেবক হিসেবে কাজে চেষ্টার কোন ত্রুটি রাখে নি। 


              প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিকাশের প্রথম শর্ত হচ্ছে আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থা। আর ভারতীয় জনতা পার্টির শাসনে ত্রিপুরায় আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। সেই জায়গায় বামপন্থীরা ত্রিপুরার বিকাশকে বিনাশের দিকে নিয়ে গেছে। তাই ত্রিপুরার মানুষকে সিপিএম কংগ্রেসের অশুভ আঁতাত নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তাদের অনৈতিক কাজকর্মের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ত্রিপুরার সার্বিক বিকাশে ডাবল ইঞ্জিন সরকারের বিকল্প নেই। ডাবল ইঞ্জিন সরকার থাকলেই ত্রিপুরায় উন্নয়নে গতি আসবে। দিল্লির টাকা ঠিক ঠিকভাবে খরচ হবে। আগে দিল্লি থেকে এক টাকা পাঠানো হলে মাত্র ১৫ পয়সা এসে পৌঁছতো। বাকি ৮৫ পয়সা নেতাদের পকেটে চলে যেতো। আর সেই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি নেতৃত্বাধীন সরকার। এখন দিল্লি থেকে পাঠানো সব টাকাই জনগণের জন্য ব্যয় হয়। ত্রিপুরা এখন বিকাশের লক্ষ্যে দ্রুত এগিয়ে চলছে। এখানে হীরা মডেলের বাস্তবায়ন হচ্ছে। ত্রিপুরায় জাতীয় সড়কের উন্নয়ন হচ্ছে। ইন্টারনেটে জুড়ে যাচ্ছে সব জায়গা। রেলওয়ের উন্নয়ন ঘটছে। আগরতলা আখাউড়া রেল সংযোগের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ত্রিপুরার অংশে কাজ অনেকাংশে শেষ হয়ে আসছে। বাংলাদেশের অংশে জোরদার কাজ চলছে। 

 

        প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আরো বলেন, ত্রিপুরার উন্নয়নে নতুন পালক জুড়ছে। সাব্রুমের ফেনী নদীতে ব্রিজ স্থাপন হয়েছে। এতে ত্রিপুরার আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে। যুব সমাজ উপকৃত হবে। আগামীতে ফেনী ব্রিজের মাধ্যমে ত্রিপুরার উন্নতির দুয়ার আরো খুলে যাবে। এদিন প্রধানমন্ত্রী সিপিএম কংগ্রেসের মিতালী নিয়ে ক্ষোভ ছুঁড়ে দেন। তিনি বলেন, কেরলে বাম কংগ্রেস মিলে কুস্তি করছে। অথচ ত্রিপুরায় দোস্তি করছে তারা। এরা জনতার জন্য কিছুই করে নি। শুধু ক্ষমতার জন্য তারা যে কোন পর্যায়ে যেতে পারে।  এদিন দ্বিতীয় বারের জন্য নির্বাচনী প্রচারে রাজ্যে আসেন প্রধানমন্ত্রী। মোদি বেশ ক্ষোভের সুরে বলেন,  কংগ্রেসের কিছু নেতার ক্ষমতার লোভ রয়েছে। এদের মত স্বার্থান্বেষী মহল থেকে দূরে থাকতে হবে রাজ্যের মানুষকে। আসন্ন ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি গত বারের চাইতে অধিক আসন নিয়ে ক্ষমতাসীন হবে ভারতীয় জনতা পার্টি। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি বিজেপি প্রার্থীদের জয়ী করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। 


               সমাবেশে অন্যতম বক্তা হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ফের একবার কংগ্রেস সিপিএমের অশুভ জোটের তীব্র সমালোচনা করেন। সেই সাথে তিপ্রা মথাকেও একহাত নেন। এসকল অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় জনতা পার্টির মনোনীত প্রার্থীদের বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ত্রিপুরার মানুষের জন্য দুর্ভাগ্যের কারণ কংগ্রেস সিপিএমের অশুভ আঁতাত। এখন কংগ্রেস অফিস থেকে সিপিএমের ফ্ল্যাগ এবং সিপিএম অফিস থেকে কংগ্রেসের ফ্ল্যাগ বের হয়। শুধুমাত্র ক্ষমতার লোভে গড়া এই অশুভ আঁতাতের বিরুদ্ধে ত্রিপুরার মানুষ যোগ্য জবাব দেবেন। 

 

           এদিন গোটা স্বামী বিবেকানন্দ ময়দান চত্বর মোদিময় হয়ে উঠে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জন সমাবেশ স্থলে পৌঁছার পর উপস্থিত জনতা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে। চারদিক থেকে একটাই আওয়াজ তখন 'মোদি মোদি'। এদিন স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে হাজার হাজার জনতা তাদের প্রিয় নেতা মোদিকে একঝলক চাক্ষুষ করতে যেভাবে সকাল থেকে জড়ো হয়েছেন সেটা আভাস দিচ্ছে ত্রিপুরায় ফের একবার প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টির পদ্মফুলের সরকার।  রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিজেপির কর্মী সমর্থকরা দলে দলে সমাবেশে যোগ দেন।



Tripura Assembly Election 2023 : সোমবার থেকে শুরু ৭২ ঘন্টা প্রটোকল, চেকিং হবে হোটেল সহ বিভিন্ন গেস্টহাউসে 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Bottom Ad