আগরতলা, ০৬ নভেম্বর : রাজধানীর ভি ভি আই পি রোডে রবিবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে মৃত্যু হয় নাগিনা প্ৰসাদ রায় (৬০) নামে একজনের। সীমানার বিবাদকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে ঘটে এই সংঘর্ষ। এতে এক ব্যক্তির মৃত্যু সহ গুরুতর আহত হয় পাঁচজন। এই ঘটনায় মৃতার পরিবারের লোকজন এনসিসি থানার একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত চালিয়ে সোমবার পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। তারা হলো ১) বিজেন্দ্র রাই ২) সতীন্দ্র রাই ৩ ) দীনেশ রাই, ৪) নসিব লাল রাই এবং ৫) রামসাগর রাই। তাদের প্রত্যেককে এনসিসি থানার পুলিশ আধিকারিকরা আটক করে। পাশাপাশি তাদের স্বীকারোভিতে হত্যার কাজে ব্যবহৃত লোহার রড সহ অন্যান্য সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করে। তাদের প্রত্যেককেই সোমবার আদালতে সোপর্দ করা হয়। নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘন্টা বাদেও অধরা থাকে মূল অভিযুক্ত বিএসএফ জওয়ান নিচিবির রাই। তার গ্ৰেপ্তার সহ সুবিচারের দাবিতে মরদেহ নিয়ে সোমবার দুপুরে রাস্তা অবরোধ করে মৃতের পরিবার সহ আগরতলার গোয়ালাবস্তি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা।
জানা গেছে রবিবার দুপুরে এনসিসি থানাধীন খেজুর বাগান এলাকায় নাগিনা প্ৰসাদ রাই ও রাম সাগর রাইয়ের পরিবারের মধ্যে সীমানা নিয়ে বিরোধ বাঁধে। এই বিরোধ একসময় আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে। উত্তেজিত অবস্থায় দুই পরিবারের মধ্যে আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণ শুরু হয়। এতে নাগিনা প্রসাদ রাই সহ দুই পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হয়। আহতদের মধ্যে নাগিনা প্রসাদ রাইয়ের মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। বেলা দুইটা নাগাদ নাগিনা প্রসাদ রাইকে জিবিপি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ৯ টা নাগাদ জিবিপি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাগিনা প্রসাদ রায় (৬০) এর মৃত্যু হয়।
নাগিনা প্রসাদ রাইয়ের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই পুনরায় দুই পরিবারের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয় । যদিও ঘটনার পরেই পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ রাম সাগর রাইকে গ্রেফতার করেছে। যতদূর খবর দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিবেশী দুই পরিবারের মধ্যে সম্পত্তির সীমানা নিয়ে বিরোধ চলছিল। সম্প্রতি সীমানার দুই হাত জায়গার দখলদারি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। রবিবার সকাল থেকেই সীমানার সমস্যাকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে বাকবিতণ্ডা চলতে থাকে। বেলা দুইটা নাগাদ বাকবিতণ্ডা হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছয়। উত্তেজিত হয়ে রাম সাগর রাই এর পরিবারের লোকেরা লাঠিসোটা নিয়ে আক্রমণ চালায় নাগিনা প্রসাদ রাইয়ের উপর। আর এতেই গুরুতর জখম হন নাগিনা প্রসাদ রাই। এই আক্রমণের প্রতি আক্রমণে দুই পরিবারেরই আরো পাঁচজন অল্পবিস্তর আহত হয়েছে। নাগিনা প্রসাদের ছেলেও এই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছে।
সাংবাদিকদের সামনে নিজের শোক এবং ক্ষোভ প্রকাশ করে সদ্য পিতৃহারা যুবক। নিজের বাবার মৃত্যুর সঠিক বিচার চায় সে। কথা বলার সময় বার বার গলা ভারী হয়ে আসছিল তার। কিন্তু চোখে মুখে ছিল একরাশ ক্ষোভ। অন্যদিকে তার মা ও বোন বার বার শোকে বিহ্বল হয়ে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলছিল। তাদের দাবি একটাই ছিল। যারা তার বাবাকে খুন করেছে তারা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায়।
Drug Trafficking : জুমেরঢেপা এলাকাবাসীর হাতে আটক ১, রাজনগরে উদ্ধার ৬৪ বোতল বিলেতি মদ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন