Tripura Police week : পুলিশ সপ্তাহ উদযাপন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় ত্রিপুরা পুলিশ যথেষ্ট সংবেদনশীল - ব্রহ্মকুন্ড বার্তা Brahamakundabartaa

ব্রহ্মকুন্ড বার্তা  Brahamakundabartaa

দেশ-বিদেশ ও ত্রিপুরার সব খবরের আপডেট

Post Top Ad

Translate

Tripura Police week : পুলিশ সপ্তাহ উদযাপন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় ত্রিপুরা পুলিশ যথেষ্ট সংবেদনশীল

Share This


 আগরতলা, ১৭ জানুয়ারি : রাজ্যে আইন শৃঙ্খলার উন্নয়নে ত্রিপুরা পুলিশ যে সাফল্য অর্জন করেছে তা সারাদেশেই প্রশংসিত হয়েছে। রাজ্য পুলিশের এই সাফল্যে আমরাও গর্ব অনুভব করি। বুধবার অরুন্ধতীনগরস্থিত মনোরঞ্জন দেববর্মা স্মৃতি স্টেডিয়ামে পুলিশ সপ্তাহ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় ত্রিপুরা পুলিশ যে সফলতা পেয়েছে তাতে আত্মতুষ্টির অবকাশ নেই। সাফল্যের এই ধারা যাতে আগামীদিনেও বজায় থাকে সে বিষয়ে প্রয়াস জারি রাখতে হবে। রাজ্যে আইন শৃখলা উন্নয়নের তথ্য তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সর্বনিম্ন অপরাধের হারের নিরিখে ২৮টি রাজ্যের মধ্যে আমাদের রাজ্য বর্তমানে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। ত্রিপুরায় প্রতি লক্ষ জনসংখ্যায় ১১০টি অপরাধের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে জাতীয় গড় হচ্ছে ৪২২টি। এর আগের বছর ত্রিপুরার স্থান ছিল পঞ্চম। শারীরিক আক্রমণ সংক্রান্ত অপরাধের ক্ষেত্রে ২৮টি রাজ্যের মধ্যে ত্রিপুরার স্থান হচ্ছে সর্বনিম্ন অষ্টম। এক্ষেত্রে প্রতি লক্ষ জনসংখ্যায় ত্রিপুরায় অপরাধের ঘটনা হচ্ছে ৪৩.৮টি, আর জাতীয় গড় হচ্ছে ৮৪টি। তার আগের বছর ত্রিপুরার স্থান ছিল দশম। সম্পত্তি সংক্রান্ত অপরাধের ক্ষেত্রে ২৮টি রাজ্যের মধ্যে ত্রিপুরা সর্বনিম্ন স্থান দখল করেছে। প্রতি লক্ষ জনসংখ্যায় মাত্র ১১.৯টি এ জাতীয় অপরাধ নথীভুক্ত হয়েছে। যেখানে জাতীয় গড় হচ্ছে ২০.৮টি। তার আগের বছর ত্রিপুরার স্থান ছিল ৩য় সর্বনিম্ন।


অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২৮টি রাজ্যের মধ্যে নারী সংক্রান্ত অপরাধের ক্ষেত্রে ত্রিপুরার স্থান সর্বনিম্ন ৮ম। প্রতি লক্ষ জনসংখ্যায় ৩৭টি নারী সংক্রান্ত অপরাধের ঘটনা ঘটেছে ত্রিপুরায়। যেখানে জাতীয় গড় হচ্ছে ৬৬টি ঘটনা। এক্ষেত্রে বিগত বছরে ত্রিপুরার স্থান ছিল ৯ম। মুখ্যমন্ত্রী বলেন নারী সংক্রান্ত অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মহিলাদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরী করতে প্রতিটি থানায় হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছে। যা ২৪ ঘন্টাই খোলা থাকে। তাছাড়া মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সরকার ১০৯১ হেল্পলাইন চালু করেছে। রাজ্যে আরও দু'টি নতুন মহিলা থানা খোলা হয়েছে। এতে রাজ্যে মোট মহিলা থানার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯টি। রাজ্যের সবকটি জেলায় কমপক্ষে ১টি মহিলা থানা স্থাপন করা হয়েছে। ত্রিপুরাই একমাত্র রাজ্য হয়েছে যেখানে প্রতিটি জেলায় মহিলা থানা রয়েছে।


মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে যৌতুক সংক্রান্ত অপরাধ, ডাকাতি, চুরি, খুন ইত্যাদি সহ সার্বিক অপরাধের চিত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি পরিলক্ষিত হয়েছে। ২০২২ এর তুলনায় ২০২৩ সালে সম্পত্তি সংক্রান্ত অপরাধের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে ৭ শতাংশ এবং খুনের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে ৭ শতাংশ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের সার্বিক আইন শৃঙ্খলার অবস্থা সন্তোষজনক। বড় ধরণের অপরাধের সংখ্যা নিম্নমুখী। রাজ্যে একটি বড় উদ্বেগের কারণ ছিল সন্ত্রাসবাদ। বেআইনী অনুপ্রবেশকারী বিশেষ করে বাংলাদেশী এবং রোহিঙ্গাদের গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য সাফল্য পাওয়া গেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত ত্রিপুরা বিধনাসভা নির্বাচন এবং গত সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনেও ত্রিপুরা পুলিশের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। অন্যান্য নির্বাচনের তুলনায় এই নির্বাচনী প্রক্রিয়া চলাকালীন সময়ে বড় ধরণের কোন অপ্রিয় ঘটনা ঘটেনি।


অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বিভিন্ন উৎসবের সময় বিশেষ করে দুর্গাপূজা, দীপাবলির মতো বড় বড় উৎসব চলাকালেও ত্রিপুরা পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। নেশামুক্ত ত্রিপুরা অভিযানেও ত্রিপুরা পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো অনুযায়ী নেশা সামগ্রী বাজেয়াপ্ত ও ধবংস করার ক্ষেত্রেও ত্রিপুরা ভারতের সফল রাজ্যগুলির মধ্যে অন্যতম। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিয়ন্ত্রণ আনতে ২০২৩ এর শুরু থেকে ত্রিপুরা পুলিশ মিশন মুডে ট্রাফিক নিয়ম কঠোরভাবে বলবৎ শুরু করেছে। রাজ্যের বিভিন্ন জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়কের ৮০টি চিহ্নিত দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকা এবং ১৬টি ব্ল‍্যাক স্পট এর মূল্যায়ণ করে এই অভিযানের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। রাজ্যের যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি সত্ত্বেও ত্রিপুরা পুলিশ সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে কঠোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২২ এ রাজ্যে যানবাহনের সংখ্যা ছিল ৬,৮৯,৪০০টি যা ২০২৩ সালে দাঁড়িয়েছে ৭,৪৬,০৩ ১টি।


মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে সারা রাজ্যে মোট ৩০৩টি স্টুডেন্ট পুলিশ ক্যাডেট প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৬৩টি বিদ্যালয়ে ২০৫টি স্টুডেন্ট পুলিশ ক্যাডেট প্রোগ্রাম আয়োজিত হয়েছে, যেখানে স্থানীয়দের সাথে সম্পর্ক নিবিড়তর করার জন্য স্থানীয় পুলিশ কর্মীরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে। ২০২৩ সালে প্রয়াস-এর মাধ্যমে রাজ্যব্যাপী মোট ৫৯০৩টি সচেতনতামূলক সভার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও আজাদি কা অমরুত মহোৎসবের অঙ্গ হিসেবে পুলিশ এবং টি এস আর জওয়ানদের দ্বারা 'রান ফর ইউনিটি', 'স্বচ্ছ ভারত অভিযান', ফুটবল/ভলিবল টুর্নামেন্ট, স্বাস্থ্য শিবির ইত্যাদির আয়োজন করা হয়েছে। ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর ইমার্জেন্সি রেসপন্স সাপোর্ট সিস্টেম প্রকল্পে রাজ্যব্যাপী ইমার্জেন্সি নম্বর '১১২' চালু করা হয়েছে। এটা প্রতি দিনই ২৪ ঘন্টা চালু রয়েছে। ইমার্জেন্সি রেসপন্স সাপোর্ট সিস্টেমের অধীনে গড় রেসপন্সের সময় ২০২২ সালের ১০.৫১ মিনিটের তুলনায় ২০২৩ সালে ৯.৩৯ মিনিটে নেমে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ১৪১৩ জন টিএসআর জওয়ানের বেসিক ট্রেনিং সম্প্রতি শেষ হয়েছে। দিল্লী এবং ছত্তিশগড়ে দু'টি টি এস আর ব্যাটেলিয়ন মোতায়ন করা হয়েছে। টি এস আর দ্বিতীয় ব্যাটেলিয়নকে রাজ্যের বাইরে দিল্লী পুলিশের সাথে আইন শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালনের জন্য মোতায়েন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন গত ৫ বছরে রাজ্যে থানার সংখ্যা ৮১ থেকে বাড়িয়ে ১০১টি করা হয়েছে। ১০১টি থানার মধ্যে ৮৭টি বর্তমানে চালু রয়েছে এবং বাকী ১৪টি থানার উদ্বোধন শীঘ্রই করা হবে। ৫টি নতুন জি আর পি এস'র মধ্যে বিলোনীয়া জি আর পি এস'-এর উদ্বোধন করা হয়েছে। বাকী ৪টি জি আর পি এস যেমন, সাব্রুম, উদয়পুর, বিশালগড় এবং বিশ্রামগঞ্জে শীঘ্রই চালু করা হবে।


কেটিডিএস পুলিশ ট্রেনিং একাডেমি কনস্টেবলদের সর্বোত্তম মানের প্রশিক্ষণ প্রদানের ক্ষেত্রে দেশের শীর্ষস্থানে রয়েছে। এটা গর্বের বিষয় যে, এই প্রথমবারের মতো মণিপুর রাজ্য তাদের কনস্টেবলদের ত্রিপুরা পুলিশ দ্বারা প্রশিক্ষণের জন্য অনুরোধ করেছে। আগরতলায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর অফিস খোলার প্রয়োজনীয়তার সুবিধার্থে জেকশন গেটস্থিত এনবিসিসি এর বর্তমান অফিস ভবনের একটি অংশকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন সহ পুলিশ প্রশাসনের অন্যান্য আধিকারিকগণ। অনুষ্ঠানের শুরুতে টি এস আর (পুরুষ ও মহিলা), পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা পুলিশ, হোমগার্ডের জওয়ানরা কুচকাওয়াজ প্রদর্শনের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীকে অভিবাদন জানান। গত বছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছেন এমন কয়েকজন পুলিশ আধিকারিক সহ বিভিন্ন থানাকে পুলিশ সপ্তাহ উদযাপন অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত করা হয়েছে। পুরস্কার স্বরূপ তাদের হাতে ট্রফি তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী।







Review Meeting : TIFT এর পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী, জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে পরামর্শ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Bottom Ad