আগরতলা, ৩০ মে : বেহাল পরিসেবায় ক্ষুব্ধ হয়ে সোনামুড়া বিদ্যুৎ দপ্তরের অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিলো জনতা। ১৫ দিন ধরে বিদ্যুৎ সমস্যায় ভোগছে সোনামুড়া দুর্গাপুরের বাসিন্দারা । শহর লাগাও এই গ্ৰামে বিকল হওয়া ট্রান্সফরমার আওতাধীন ১০০ পরিবারের বসবাস, ১৫ দিন ধরে ট্রান্সফরমার নষ্ট বার বার সোনামুড়া বিদ্যুৎ দপ্তর জানিয়েও কাজের কাজ কিছু না হয় আজ ক্ষুব্ধ হয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয় যুবকরা, প্রায় দুই ঘন্টা হলেও এখনো তালা খোলতে আসে নি, আটকে আছে বিদুৎ কর্মীরা।
এদিকে গতকাল আইনজীবীর হাতে হেনস্থার শিকার হন বিদ্যুৎ নিগমের সিনিয়র ম্যানেজার অপু পাল। ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বৃহস্পতিবার ইঞ্জিনিয়ার ফোরাম ডেপুটেশন প্রদান করে নিগমের এমডি'র কাছে। সেই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান ইঞ্জিনিয়াররা। জানা গেছে সিনিয়র ম্যানেজার অপু পাল গোটা ঘটনা জানিয়ে নিগমের এমডি'র কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। পাশাপাশি নিগমের তরফে অভিযুক্ত আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর ।
উল্লেখ্য রেমাল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সারা রাজ্যেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিদ্যুৎ ও কৃষি ক্ষেত্রে। প্রাথমিক হিসেব অনুসারে বিদ্যুৎ দপ্তরের ৫ কোটি টাকার বেশী ক্ষতি হয়েছে বলে। আজ সচিবালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে বিদ্যুৎ দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং জানিয়েছেন। তিনি জানান, রেমাল ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগাম প্রস্তুতি নেওয়ায় রাজ্যে এখন পর্যন্ত কোনও জীবনহানি হয়নি। তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রাজ্যের সবকটি জেলায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সারা রাজ্যে প্রায় ৫৫০ কিমি বিদ্যুৎ পরিবাহী লাইনের ক্ষতি হয়েছে, ৮৫০ টি বিদ্যুতের খুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ১০০-এর উপর ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে গেছে। বর্তমানে রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করতে বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মী সহ ঠিকেদার সংস্থার ৯৯৪ জন কর্মী কাজ করে চলেছেন। ইতিমধ্যেই প্রায় ৬০ শতাংশ বিদ্যুৎ খুঁটি সারাইয়ের কাজ শেষ করা হয়েছে। বাকি খুঁটিগুলির সারাই এবং বসানোর কাজও দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। সচিব আরও জানান, সারা রাজ্য থেকে জনসাধারণ তাদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য বিদ্যুৎ দপ্তরে কল করছেন। সবগুলি কলের সমস্যা অতিদ্রুত সমাধান করার জন্য দপ্তরের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিষেবাকে স্বাভাবিক করার জন্য বনদপ্তর, এসডিআরএফ, এনডিআরএফ, রাজ্য প্রশাসন সহ বিভিন্ন দপ্তর মিলিতভাবে কাজ করছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির স্টেট প্রজেক্ট অফিসার শরৎ দাস জানান, রেমালের প্রভাবে রাজ্যব্যাপী ক্ষতির মূল্যায়ন এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট সহ প্রশাসন উদ্যোগী রয়েছে। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ১,৫৭৪টি ঘর রেমাল ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্যব্যাপী বর্তমানে ১২টি ত্রান শিবির চালু রয়েছে। সেখানে ১,২২০ জন অবস্থান করছেন। পাশাপাশি ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতির নিরুপণেরও কাজ চলছে। সাংবাদিক সম্মেলনে ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর দেবাশিষ সরকার রেমাল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিদ্যুৎ পরিকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতির তথ্য বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন