নতুন দিল্লি, ০৩ আগস্ট : ভূমিধ্বসে বিপর্যস্ত কেরলের ওয়েনাড়। শনিবার সকাল থেকেই উদ্ধার কাজ জোরদার ভাবে শুরু হয়। সশস্ত্র বাহিনী, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল এবং অন্যান্য সংস্থার ৪০ টি দল, ৬ টি জোনে ভাগ হয়ে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। গতকাল ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে ১৪টি দেহ উদ্ধার হয়। এখনো পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেসরকারি হিসাবে সারে তিনশো ছাড়িয়েছে। ১৭ টি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে আড়াই হাজারের বেশী মানুষকে।
আজ উদ্ধারকাজে গতি আসার ফলে গত ৩০ জুলাই, কেরলে যে ভূমিধস হয়েছিল তাতে, ওয়ানাডের পাহাড়ি অঞ্চলে বেশ কয়েকজন উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ আটকে পড়েছিলেন৷ তাঁদের উদ্ধার করতে কালপেট্টা রেঞ্জের বন কর্মকর্তা কে হাশিসের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল প্রবল ঝড় বৃষ্টি মাথায় নিয়ে পাহাড়ি অঞ্চলে অভিযান চালায়৷ আটঘণ্টার এই দুঃসাহসিক অভিযানের পর চারবছর বয়সী তার শিশু ও তাঁদের মা-বাবাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়৷
সরকারিভাবে জানানো হয়, দুর্গতদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। সেনা বাহিনীর সঙ্গে রয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও বিভিন্ন সংস্থার কর্মীরা । ধ্বংসস্তুপ সরিয়ে দেহের খোঁজ চালানো হচ্ছে। কেরল সরকারের অনুরোধে ধ্বংসস্তুপের মধ্যে তল্লাশি চালানোর জন্য একটি জেভার রাডার, চারটি রেকো রাডার অপারেটার সহ দিল্লি থেকে বিমানে উড়িয়ে নেওয়া হয়েছে বলে, সেনার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আজ ধ্বংসস্তুপের মধ্য থেকে দেহ উদ্ধার এবং জরুরী পরিষেবা আবার চালু করার জন্য সেনাবাহিনী কাজ চালাচ্ছে।
এদিকে সরকার কেরালায় ভূমিধ্বসে ক্ষতিগ্রস্থদের বীমা সংক্রান্ত দাবিগুলির দ্রুত নিস্পত্তি করতে রাষ্ট্রায়ত্ব বিমা কোম্পানিগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে। অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, PM জীবন জ্যোতি বিমা যোজনার অধীনে পলিসি হোল্ডারদের ক্ষেত্রে LIC কে দ্রুত বিমার টাকা দিয়ে দিতে বলা হয়েছে। মন্ত্রক বলেছে, দাবির পরিমাণ দ্রুত নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। বীমা কোম্পানিগুলি ওয়েনাড়, পালাক্কাদ, কোঝিকোড়, মালাপ্পুরম এবং ত্রিশুর জেলাগুলিতে বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে তাদের বিমাকারিদের কাছে পৌঁছানোর প্রচেষ্টা শুরু করেছে।
অপরদিকে লাদাখে, কার্গিলের কাবাডি নালা এলাকায় ভূমিধসের ফলে আজ ভোরে একটি বাড়ি ধসে পড়লে ১২ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের দ্রুত উদ্ধার করে কার্গিলের জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। একই ভাবে উত্তরাখণ্ডে, আটকে পড়াদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার জন্য কেদারনাথ ধাম এবং যাত্রা রুটের বিভিন্ন স্থানে ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান আজ তৃতীয় দিনেও চলছে। এ পর্যন্ত প্রায় সাত হাজার তীর্থযাত্রী ও স্থানীয় লোকজনকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযান দ্রুত সম্পন্ন করতে এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, ডিডিআরএফ এবং পুলিশ হেলিকপ্টার ব্যবহারের পাশাপাশি যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে। এখনও প্রায় এক হাজার তীর্থযাত্রী বিভিন্ন স্থানে আটকে আছেন ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন