আগরতলা, ২০ নভেম্বর : বিরুধীদের কারণেই মাঝেমধ্যে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলায় সমস্যা দেখা দেয়। বর্তমান সরকারের সময়কালে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা যথেষ্ট উন্নত । অথচ কমিউনিস্টদের রাজত্বকালে রাজ্যে স্কুল-কলেজে বোমা বাজি দেখেছে সাধারণ মানুষ। যা এখন বন্ধ হয়েছে । রবিবার সূর্যমনি নগর বিধানসভা কেন্দ্রের ডুকলীতে ভারতীয় জনতা পার্টি সূর্যমনি নগর যুবমোর্চা আয়োজিত সুশাসন জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।তিনি নেশা বিরোধী অভিযানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে বর্তমান সরকার কাজ করছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী । তিনি বলেন, নেশা সামগ্রী বাজেয়াপ্তকরণের পরিসংখ্যানে উত্তর-পূর্ব ভারতে সেকেন্ড হাইয়েস্ট রাজ্য হিসেবে রয়েছে ত্রিপুরা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগে কম্যুনিস্টদের মুখে বুলিই ছিল সমাজবাদ সমাজবাদ । এই করতে করতে এখন তাঁদের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি বলেন, ৭০ এর দশকে কমিউনিস্টদের ভুল আইডিওলজির কারনে বহু তরুণ প্রাণকে হারাতে হয়েছিল । কিন্তু ভারতীয় জনতা পার্টির আইডিওলজি পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের চিন্তা চেতনা । এই দল মনে করে সবাই এক । কিন্তু কমিউনিস্টরা সবসময় ডিভাইড এন্ড রোল পলিসি নিয়ে চলেছে।
সূর্যমণিনগর বিধানসভা কেন্দ্রের ডুকলিতে ভারতীয় জনতা পার্টির বিশাল সুশাসন জনসমাবেশ থেকে উঠছে আওয়াজ রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নে "বিজেপি আবার" pic.twitter.com/w29Ul1TYgx
— Prof.(Dr.) Manik Saha (@DrManikSaha2) November 20, 2022
মুখ্যমন্ত্রীর তাঁর বক্তব্যে কেন বর্তমান সরকার ১৭ ই সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে 'প্রতি ঘরে সুশাসন' অভিযান কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, তার বিস্তৃত ব্যাখ্যা করেন। একই সাথে তিনি রাজ্যের গ্রামাঞ্চলের মানুষের সাধারণ সমস্যাগুলো সমাধানে বর্তমান সরকারের পদক্ষেপ, 'আমার সরকার' পোর্টালের বিষয়েও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গ্রামাঞ্চলের যে সাধারণ সমস্যার কথা এই পোর্টালে লিপিবদ্ধ করা হবে, তা ১০ দিনের মধ্যে নিরসনের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবে প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের সাধারণ মানুষ যাতে বর্তমান সরকারকে নিজের সরকার বলে ভাবতে পারে তার জন্যেই এই পোর্টাল।
মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা তাঁর বক্তব্যে বিগত সরকারের রাজত্বকালের সমালোচনা করে বলেন, ২০১৮ সালের আগে রাজ্যে এক সন্ত্রাস পার্টির সরকার ছিল । ঐ সরকারের সময়কালে সূর্যমনি নগর বিধানসভা তেও ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মসূচি চালিয়ে যেতে হয়েছিল বহু লড়াই সংগ্রাম করে । এর মধ্যে তিনি নিজের কিছু অভিজ্ঞতার কথাও সমাবেশে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, যখন তিনি দলের সদর আরবান জেলার পৃষ্ঠা প্রমুখ গঠনের দায়িত্ব পেয়েছিলেন, তখন সর্বোচ্চ ৯৬ শতাংশ পৃষ্ঠা প্রমুখ সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন এই সূর্যমনি নগর বিধানসভা কেন্দ্রে । যা দেখে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব প্রশংসাও করেছিলেন।
সরকারি চাকুরী ও কর্মসংস্থানের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কাজ নেই, চাকরি নেই, এই কথাগুলো বিরোধীদের মুখে প্রায়ই শোনা যায় । অথচ মাত্র কিছুদিন আগেই ৩ হাজারের উপর টেট উত্তীর্ণ শিক্ষকদের অফার ছাড়া হয়েছে। ৬ হাজারের বেশি রাজ্য পুলিশে স্পেশাল এক্সিকিউটিভ পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। কর্মচারীদের প্রথমে ৩ শতাংশ এবং তরে ৫ শতাংশ ডিএ দেয়া হয়েছে। অথচ আগে কর্মচারীদের কাছ থেকে শুধু চাঁদা আদায় করা হতো।
সামাজিক ভাতা ২০০০ টাকা করার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগের সরকারের সময়ে ৭০০ টাকা করে সামাজিক ভাতা দেয়া হতো । বর্তমান সরকারের সময়ে প্রথমে ১০০০ টাকা, এখন ২০০০ টাকা করা হয়েছে । আরো ৩০০০ জনকে মুখ্যমন্ত্রী সামাজিক সহায়তা প্রকল্পে ভাতার আওতায় আনার কাজ চলছে।
এদিনের জনসভায় সাধারণ মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি দেখে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সূর্য মনিনগর বিধানসভা কেন্দ্রের মানুষ যা করে দেখালো এমন সুশাসন জনসভা রাজ্যের প্রত্যেকটা বিধানসভা এলাকায় করতে হবে। তিনি নিজেও চান তাঁর নির্বাচনী ক্ষেত্র বড়দোয়ালীতেও এমন জনসভার আয়োজন করতে। তিনি বলেন, জনসাধারণের এই বিশাল উপস্থিতি সংকেত দিচ্ছে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিশাল সংখ্যক আসন দখল করে ভারতীয় জনতা পার্টি সরকার গঠন করবে।
এদিনের জনসভায় উপস্থিত ছিলেন এলাকার বিধায়ক তথা কারামন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল, বিজেপি প্রদেশ সাধারণ সম্পাদক কিশোর বর্মন, মন্ডল সভাপতি মন্টু দেবনাথ, ডুকলী পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান অজয় কুমার দাস প্রমুখ ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন