আগরতলা, ২৮ এপ্রিল : পড়াশুনার সাথে সাথে ছাত্রছাত্রীদের খেলাধূলা সহ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সৃজনমূলক কাজেও যুক্ত হতে হবে। পাশাপাশি সময়ের প্রতি মূল্য দিয়ে সময়ের কাজ সময়ের মধ্যেই সম্পন্ন করার অভ্যাসও গড়ে তুলতে হবে। তবেই ছাত্রছাত্রীরা নিজেদেরকে সমাজে একজন প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। শুক্রবার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত ২০২২ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বিশেষ সাফল্যের জন্য ছাত্রছাত্রীদের 'চিফ মিনিস্টারস অ্যানুয়েল স্টেট অ্যাওয়ার্ড ফর অ্যাকাডেমিক এক্সিলেন্স' প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা একথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন, ২০১৮ সাল থেকে শিক্ষা দপ্তর ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বিশেষ সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ ছাত্রছাত্রীদের এই পুরস্কার প্রদান করছে। পুরস্কার প্রদানের মূল উদ্দেশ্য হল ছাত্রছাত্রীদের প্রতিযোগিতামূলক শিক্ষায় উৎসাহিত করা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে গুণগত শিক্ষা প্রদানের উপর গুরুত্ব দিয়েছে। ফলস্বরূপ গত কয়েক বছরে ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের হারও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী তথ্য সহ বলেন, ২০১৮ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের হার যেখানে ছিল ৫২.২৫ শতাংশ তা 2022 সালে বেড়ে হয়েছিল ৯১.০২ শতাংশ। মাধ্যমিক পরীক্ষায় অন্যান্য ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে জনজাতি অংশের ছাত্রছাত্রীদের পাশের হারও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ২০১৮ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় জনজাতি অংশের ছাত্রছাত্রীদের পাশের হার ছিল ৩৭.৩০ শতাংশ, যা ২০২২ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৮৬.৫৫ শতাংশ। এছাড়া ২০১৮ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের হার ছিল যেখানে ৭০.৫৮ শতাংশ তা ২০২২ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৯৭.৪৫ শতাংশ। ২০১৮ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় জনজাতি অংশের ছাত্রছাত্রীদের পাশের হার ছিল ৬৪.১৮ শতাংশ যা ২০২২ সালে বেড়ে হয়েছে ৯৬.৫৩ শতাংশ।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের ছেলেমেয়েরা যাতে রাজ্য থেকেই উচ্চশিক্ষার সুযোগ লাভ করতে পারে তার জন্য পরিকাঠামোও গড়ে তোলা হয়েছে। বর্তমানে উচ্চশিক্ষার জন্য রাজ্যে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, রাজ্য সরকার নিয়ন্ত্রনাধীন বিশ্ববিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, আইন কলেজ, ফরেন্সিক বিশ্ববিদ্যালয়, ডেন্টাল কলেজ, ইঞ্জিনীয়ারিং কলেজ, ২টি মেডিক্যাল কলেজ, ফার্মাসি কলেজ ইত্যাদি রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার নেশামুক্ত ত্রিপুরা গঠনে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও নেশার বিরুদ্ধে একটা গণ জাগরণ গড়ে তুলতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা দপ্তরের সচিব শরদিন্দু চৌধুরী বলেন, গত কয়েক বছরে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারও রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় আগামী দিনে রাজ্যে গুণগত শিক্ষার প্রসার আরও ঘটবে বলে শিক্ষা সচিব আশা ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্যদের সভাপতি ভবতোষ সাহা এবং উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন সি শর্মা।
অনুষ্ঠানে ২০২২ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বিশেষ সাফল্যের জন্য বিভিন্ন বিভাগে ২০২ জন ছাত্রছাত্রীকে পুরস্কৃত করা হয়। এরমধ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষায় সফল ছাত্রছাত্রী রয়েছে ৩৬ জন ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় সফল ছাত্রছাত্রী রয়েছে ১৬৬ জন। পুরস্কার স্বরূপ প্রত্যেককে একটি করে আই-প্যাড ও শংসাপত্র প্রদান করা হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন