আগরতলা, ১৭ জুলাই : মাদকাসক্তি এবং বাল্যবিবাহের মত সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে সমাজের সকল অংশের মানুষেকে এগিয়ে আসতে হবে। এ ধরনের সামাজিক সমস্যা প্রতিরোধে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে এবং সুস্থ ও সুন্দর সমাজ গঠনে কাজ করছে রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার বামুটিয়া ব্লকের গান্ধীগ্রাম উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত নেশামুক্ত ভারত অভিযান ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে মেগা সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ অবৈধ ড্রাগস ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের উপর শ্লোগান, বসে আঁকো প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় স্থানাধিকারী ৬ জন ছাত্রছাত্রীর হাতে পুরস্কার ও শংসাপত্র তুলে দেন। তাছাড়া টি.বি.এস.ই, এবং সি.বি.এস.ই বোর্ড পরীক্ষায় পশ্চিম জেলায় সেরা ফলাফল করা ৬ জনের হাতে পুরস্কার ও শংসাপত্র এবং জেলার ৪টি স্ব-সহায়ক দলের হাতে ১২ লক্ষ টাকার ঋণের চেক তুলে দেন অতিথিগণ।
এদিনের অনুষ্ঠানের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সমাজের মানবসম্পদ নষ্ট হয় মাদকাসক্তির জন্য। কিছু অসাধু লোকের অবৈধ অর্থ উপার্জনের নেশায় ত্রিপুরাকে করিডোর করে এখনও ড্রাগস পাচারের চেষ্টা চলছে। বর্তমানে সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে। এই অবৈধ ড্রাগস ব্যবসার সাথে জড়িত কাউকে ছাড়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সমাজকে সুষ্ঠু সবল রাখতে অবৈধ ড্রাগস পাচারের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে চলছেন। রাজ্য সরকারও অবৈধ ড্রাগস পাচারের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে কাজ করছে। তিনি বলেন, অবৈধ ড্রাগস পাচারের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে চলার ফলে বর্তমানে রাজ্যে ড্রাগস বাজেয়াপ্ত করা এবং পাচারকারীদের গ্রেপ্তার করার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ড্রাগসের অপব্যবহার, বাল্যবিবাহ এবং এইডস প্রতিরোধে ছাত্রছাত্রী ও যুব সমাজকে এখন থেকেই সচেতন হতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এবং ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকদের ড্রাগসের অপব্যবহার এবং বাল্যবিবাহের ক্ষতিকারক দিকগুলি ও এইডস নিয়ে বিদ্যালয়ে সচেতনতামূলক সভার আয়োজন করতে হবে। ছেলেমেয়েদের আচার-আচরণের প্রতি অভিভাবকদের নজর রাখতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ছাত্রছাত্রী ও যুব সমাজের কল্যাণে রাজ্য সরকার দায়বদ্ধতা নিয়ে কাজ করছে। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সচেতনতামূলক বিষয় বিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্যও চিন্তাভাবনা করছে রাজ্য সরকার। ছাত্রছাত্রীদের শুধুমাত্র পড়াশুনায় ভালো ফলাফল করে ভালো চাকরি করলেই চলবে না। সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকতে হবে। প্রকৃত জ্ঞান অর্জন করে ভালো মানুষ হতে হবে। ছাত্রাবস্থায় প্রকৃত জ্ঞান অর্জনের মধ্য দিয়েই সমাজকে সুন্দর ও সুষ্ঠু সমাজে পরিণত করতে এগিয়ে আসতে হবে। ড্রাগসের ব্যবহার, বাল্যবিবাহ, এইডস, টি.বি. প্রতিরোধে পাড়ায় পাড়ায় সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তাকে আন্দোলনের রূপ দিতে মুখ্যমন্ত্রী সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে আগরতলা রামকৃষ্ণ মিশনের সহ-সম্পাদক বুদ্ধিরূপানন্দজি মহারাজ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুরনিগমের মেয়র বিধায়ক দীপক মজুমদার, মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন ঝর্ণা দেববর্মা, ত্রিপুরা চাইল্ড প্রোটেকশন কমিশনের চেয়ারম্যান জয়ন্তী দেববর্মা, বামুটিয়া পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান দীপক কুমার সিনহা, প্রাক্তন বিধায়ক কৃষ্ণধন দাস, পশ্চিম জেলার এস.পি. কিরণ কুমার কে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি বিশ্বজিৎ শীল এবং ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক ডা. বিশাল কুমার।
Offer Distribution : পূর্ত দপ্তরে ১৮৪ জন পেলেন জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার (ডিপ্লোমা) পদে চাকরির অফার
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন