আগরতলা, ১৪ জুলাই : থ্যালাসেমিয়া রোগ নির্মূলের অন্যতম উপায় হচ্ছে সচেতনতা এবং সতর্কতা অবলম্বন করা। পাশাপাশি সময়মতো রোগ সনাক্তকরণ ও চিকিৎসা থ্যালাসেমিয়া রোগ মোকাবিলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সোমবার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে রোটারি ক্লাব অব আগরতলার উদ্যোগে থ্যালাসেমিয়া রোগ বিষয়ক আলোচনাচক্রের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই ধরনের আলোচনাচক্র থ্যালাসেমিয়া রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক হবে। রোটারি ক্লাবের মতো অন্যান্য সামাজিক সংস্থাগুলিও এগিয়ে আসলে থ্যালাসেমিয়া রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা আরও বৃদ্ধি পাবে। থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত রোগীদের অসহায় অনুভব করার কোনও কারণ নেই। আগের থেকে জানা থাকলে এই রোগ প্রতিহত করা অনেকটাই সম্ভব। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, থ্যালাসেমিয়া সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে যথা আলফা এবং বিটা থ্যালাসেমিয়া। এই রোগে গুরুতরভাবে আক্রান্ত রোগীদের নিয়মিত রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন হয়। অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন বা বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন এই রোগের কার্যকর চিকিৎসা। রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতিকল্পে আগামীদিনে এই বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশনের কথাও ভাবছে। স্বাস্থ্য দপ্তর বাল সেবা যোজনা প্রকল্পের মাধ্যমে আগামীদিনে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের উদ্যোগ নেবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর ৮ মে বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উদযাপিত হয়। ঐদিন বিশ্বজুড়ে থ্যালাসেমিয়া রোগ সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা হয়। ভারতের প্রায় ৭০ হাজার থ্যালাসেমিয়া রোগী এবং প্রায় ৪.২ কোটি থ্যালাসেমিয়ার বাহক রয়েছে। দেশে প্রতি বছর প্রায় ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার শিশু বিটা থ্যালাসেমিয়ার মতো গুরুতর রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। রাজ্যে বর্তমানে প্রায় ২,৮৫৮ জন থ্যালাসেমিয়া রোগী রয়েছেন। থ্যালাসেমিয়া রোগ নির্মূলে বিদ্যালয় স্তর থেকে সচেতনতা গড়ে তোলা প্রয়োজন। এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী তার ভাষণে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে যে সমস্ত কর্মসূচি রূপায়ণ করা হয়েছে তা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন রোটারি ক্লাব অব আগরতলার সভাপতি কিশলয় ঘোষ, স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা ডা. তপন মজুমদার, রোটারি ক্লাবের পক্ষ থেকে ডা. কামেশ্বর সিং এলামবাম প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধ দপ্তরের অধিকর্তা ডা. অঞ্জন দাস, পদ্মশ্রী দীপা কর্মকার প্রমুখ। আলোচনাচক্রে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে থ্যালাসেমিয়া বিষয়ক মুক্ত ক্যুইজের আয়োজন করা হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন