আগরতলা, ২৯ অক্টোবর : জনবসতির ভৌগোলিক অবস্থানের ভিত্তিতে রাজ্যে নতুন আরও ২৫২টি রেশনশপ চালু করা হয়েছে। নতুন এই রেশনশপ চালুর ফলে মোট ৫০৪ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্য দপ্তরের বিশেষ সচিব সন্দীপ আর রাঠোর এ সংবাদ জানিয়েছেন। তিনি জানান, রাজ্য সরকারের নারী ক্ষমতায়ন কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবে নতুন রেশনশপগুলির ডিলারশীপ প্রদানে মহিলাদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, করোনা অতিমারীর প্রভাব থেকে সাধারণ মানুষকে যথাসম্ভব পরিত্রাণের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনার অধীনে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতাধীন সুবিধাভোগীদের নিয়মিত বরাদ্দের অতিরিক্ত ৫ কেজি হারে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য বিতরণ করা হচ্ছে। রাজ্যে ২০২০-এর এপ্রিল মাস থেকে শুরু করে এবছর সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ২৫ মাস সময়ে এই স্কিমের আওতায় মোট ২ লক্ষ ৯৮ হাজার ৮০৮ মেট্রিক টন চাল এবং ৪,৩৮১ মেট্রিক টন ডাল বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার এই যোজনার মেয়াদ এবছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে। এরফলে রাজ্যের খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতাধীন ৫ লক্ষ ১৬ হাজার পরিবার বিশেষভাবে উপকৃত হবেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্য দপ্তরের বিশেষ সচিব জানান, রাজ্যে পেট্রোল ও ডিজেলের বাফার স্টোরেজ পরিকাঠামো সম্প্রসারণে রাজ্য সরকারের ঐকান্তিক প্রয়াসের ফলে ইন্ডিয়ান ওয়েল কর্পোরেশন লিমিটেড সেকেরকোটে ৬৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২১ হাজার কিলোলিটার স্টোরেজ ক্ষমতা সম্পন্ন রেলফেড ডিপো তৈরী করার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে এবং আগামী ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এই প্রকল্প সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এই নতুন রেলফেড ডিপোর কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলে রাজ্যে প্রায় ২৫ ৩০ দিনের পেট্রোল ও ডিজেলের বাফার স্টক মজুত রাখা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান। বিশেষ সচিব জানান, এবারের উৎসব মরসুমে অন্যান্য বছরের মতো এবছরও খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের মাধ্যমে রাজ্যের ৯ লক্ষ ৫৩ হাজার রেশন কার্ডধারী পরিবারকে ১৩ টাকা কেজি দরে পরিবার প্রতি ২ কেজি করে ভর্তুকীতে ময়দা এবং খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতাধীন ৫ লক্ষ ৯৬ হাজার পরিবারকে ১৩ টাকা কেজি দরে পরিবার প্রতি ৫০০ গ্রাম করে ভর্তুকীতে সুজি বিতরণ করা হচ্ছে। ভোক্তারা বরাদ্দকৃত সামগ্রী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সংগ্রহ করতে পারবেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে বিশেষ সচিব জানান, “মুখ্যমন্ত্রী চা শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্পে এখন পর্যন্ত ১,১৮৮টি এপিএল চা শ্রমিক পরিবারের ৫, ১২৩ সদস্যকে নতুনভাবে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের প্রায়োরিটি গ্রুপের আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়াও রাজ্যে স্থায়ীভাবে পুনর্বাসিত রিয়াং (ব্রু) শরণার্থী পরিবারদের গণবন্টনের আওতায় আনার যে কর্মসূচি রাজ্য সরকার গ্রহণ করেছে সেই অনুযায়ী এখন পর্যন্ত মোট ২,২৬৯টি রিয়াং শরণার্থী পরিবারকে অন্ত্যোদয় (ব্রু) রেশন কার্ড প্রদানের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকী রিয়াং শরণার্থী পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের কাজ সম্পূর্ণ হলে তাদেরকেও এই সুবিধার আওতায় আনা হবে বলে খাদ্য দপ্তরের বিশেষ সচিব সন্দীপ আর রাঠোর সাংবাদিক সম্মেলনে জানান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন