আগরতলা, ১১ জানুয়ারি : প্রয়োজনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কিভাবে উন্নয়ন সম্ভব, সেই দৃষ্টান্তই জনগণের সামনে রাখছে বর্তমান রাজ্য সরকার। বর্তমান ত্রিপুরা হল উন্নয়নের ত্রিপুরা, উন্নতশীল ত্রিপুরা। আজ আগরতলায় শ্যামলিমা অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের (বি+জি+১৪) বহুতলবিশিষ্ট মালিকানাভিত্তিক ফ্ল্যাটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ত্রিপুরা রাজ্য এখন দেশের অন্য যেকোন রাজ্য থেকে কোন অংশ পিছিয়ে নেই। অতীতকে পর্যালোচনা করলে বুঝা যাবে বর্তমান সরকারের উন্নয়নমুখী চিন্তাধারা। তিনি বলেন, রাজ্যে এখন ৬টি জাতীয় সড়কের কাজ চলছে। ৪ টি রোপওয়ে তৈরীর কাজ হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার আসার পরই মানুষ জানতে পেরেছে কিভাবে স্বচ্ছ নীতিকে পাথেয় করে উন্নয়ন সম্ভব। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষের বসবাস করার জন্য শুধুমাত্র বাসস্থান থাকলেই হয়না। তারজন্য প্রয়োজন সুস্থ পরিবেশ। সুস্থ পরিবেশ বান্ধব সংস্কৃতি প্রদান করছে বর্তমান সরকার। তিনি বলেন, এক সময় রাজ্যের মানুষের বহিরাজ্যে ফ্ল্যাট কেনার ঝোঁক ছিল। যা বর্তমানে আর নেই। মানুষ আজ নিজ রাজ্যে ফ্ল্যাট কিনে বসবাস করতে আগ্রহী। তিনি বলেন, এই ফ্ল্যাট বাড়িগুলি নির্মাণের ক্ষেত্রে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি থেকে শুরু করে পরিবেশের কথাও মাথায় রাখা হয়েছে। পাশাপাশি নিরাপত্তার দিকটিও দেখা হয়েছে। ফ্ল্যাটগুলিতে অনেক সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে। রাজ্যের বর্তমান সরকার জনগণের বসবাসের ক্ষেত্রে কোন অংশে খামতি রাখছে না। সরকার এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা বানাতে বদ্ধপরিকর। এর প্রধান কারিগর হল রাজ্যের জনগণ। যাদের সহযোগিতায় এটা ফলপ্রসু হয়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানে পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার বলেন, আগরতলাকে উন্নত এবং সাজানোর জন্য সরকার প্রতিনিয়ত কাজ করে চলছে। তিনি বলেন, আগরতলার জনসংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে সরকার আগরতলাকে উন্নত ও আধুনিক করতে আগ্রহী। সরকারের উন্নয়নমুখী উদ্যোগের ফলেই জল নিষ্কাশন ব্যবস্থাও উন্নত করা হয়েছে। সম্প্রতি মোটরস্ট্যান্ডে মাল্টি লেভেল পার্কিংয়ের জন্য ভূমিপূজন করা হয়েছে। সরকারের মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে নাগরিকের জীবনমান উন্নয়ন এবং স্বাচ্ছন্দ নাগরিক পরিসেবা প্রদান। সেই দিশাতেই বর্তমান সরকার কাজ করে চলছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পূর্ত দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং। বক্তব্য রাখেন মুখ্য সচিব জে. কে. সিনহা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পুর নিগমের কর্পোরেটর হিরালাল দেবনাথ, হাউজিং বোর্ড এন্ড কনস্ট্রাকশন বোর্ডের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক সঞ্চয়িতা দাস, পূর্ত দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বাস্তুকার অনুপ কুমার দাস প্রমুখ। রাজ্যের পূর্ত দপ্তরের তত্ত্বাবধানে, ত্রিপুরা হাউজিং এন্ড কনস্ট্রাকশন বোর্ড এই ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে। পরে মুখ্যমন্ত্রীসহ অন্যান্য অতিথিরা গুর্খাবস্তিতে বহুতল রাজ্য প্রশাসনিক ভবনের ভূমি পূজন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, ত্রিপুরা হাউজিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে নিউ ক্যাপিটাল কমপ্লেক্সস্থিত শ্যামলিমা অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে যে ( B+G+14) তলা মালিকানা ফ্ল্যাট নির্মিত হচ্ছে তার আনুমানিক প্রোজেক্ট বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৮০ কোটি টাকা । এতে থাকবে ১৪০টি ফ্ল্যাট। থাকতে উন্নত ইলেকট্রিক সিস্টেম, সিসি ক্যামেরার সুবিধা । এছাড়াও ওঠানামার জন্য থাকবে তিনটি লিফ্ট ইত্যাদি। এই ভবনটি নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৮ শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫। এদিকে গুর্খাবস্তিতে বহুতল রাজ্য প্রশাসনিক ভবনের নির্মাণে আনুমানিক বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১২৬ কোটি টাকা। রাজ্য পূর্ত দপ্তরের তত্ত্বাবধানে নির্মীয়মান এই বহুতল প্রশাসনিক ভবনে থাকবে ইলেকট্রিক সিস্টেম, সিসিটিভি সিস্টেম, ডাটা নেটওয়ার্কিং সিস্টেম, অ্যাকসেস কন্ট্রোল সিস্টেম, ফায়ার এলার্ম এবং পাবলিক অ্যাড্রেসিং সিস্টেম সহ আরো কিছু। সবচাইতে উল্লেখযোগ্য এতে ৬৫ থেকে ৮০ কিলোওয়াট সোলার পাওয়ার জেনারেশন সিস্টেমও থাকবে । ২০২৫ সালের মার্চ মাসের মধ্যে এই ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন