আগরতলা, ১৪ মে : ত্রিপুরাতে কৃষ্টি-সংস্কৃতি পরম্পরার টইটম্বুর অবস্থান রয়েছে। বর্তমান রাজ্য সরকার তাকে লালন করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করে চলেছে। রবিবার সন্ধ্যায় তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে এবং কাকড়াবন ব্লকের ব্যাবস্থাপনায় মেলাঘর টিলা এসবি স্কুল প্রাঙ্গণে আয়োজিত দুদিনব্যাপী চড়ক মেলা এবং গাজন উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। তিনি বলেন ত্রিপুরায় পর্যটন ক্ষেত্র, কৃষি ক্ষেত্র এমনকি দেব-দেবীর মন্দিরকে কেন্দ্র করে যে সংস্কৃতি রয়েছে তার অনেক কিছু সম্পর্কেই মানুষ অবগত ছিল না । তাকে সবার সামনে তুলে ধরতে সরকার যথাযথ ভূমিকা নিয়ে কাজ করে চলেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রায় ৭০ বছর ধরে চলা কাড়ারাবনের এই চড়ক মেলা এবং গাজন উৎসব।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দুদিন ব্যাপী এই মেলায় তান্ত্রিক শক্তিকে কেন্দ্র করে নানা নিদর্শন তুলে ধরা হবে। যা প্রত্যক্ষ করতে নানা জাতি ধর্ম সম্প্রদায়ের মানুষ একত্রিত হবেন, এটাই আমাদের ভারতীয় সনাতন সংস্কৃতি, অর্থাৎ বিভিদের মাঝে ঐক্য । তিনি বলেন এই ঐক্যকে বিনষ্ট করার চক্রান্ত চলছে । কেউ কেউ ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছেন । আমাদের সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রেখে এরাজ্যের শান্তি সম্প্রীতিকে রক্ষা করতে হবে। এই বিষয়ে আরক্ষা প্রশাসনকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী ।
তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে দুদিন ব্যাপী চড়ক মেলা এবং গাজন উৎসবকে কেন্দ্র করে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা তার সাফল্য কামনা করেন। পাশাপাশি আগামী দিনে এই উৎসবকে সরকারের ক্যালেন্ডার কর্মসূচিতে নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় বলেন, আমাদের ঐতিহ্যবাহী উৎসবের মধ্যে অন্যতম হলো চড়ক ও গাজন মেলা। ছোট বড় সবাইকে এই মেলা আকর্ষণ করে। এই মেলা কাকড়াবনবাসীকে আগামী দিনে আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক অভিষেক দেবরায়, জিতেন্দ্র মজুমদার, গোমতী জিলা পরিষদের সভাধিপতি দেবল দেবরায়, উদয়পুর পুর পরিষদের চেয়ারম্যান শীতল চন্দ্র মজুমদার, কাড়ারাবন পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারপার্সন সুপ্রিয়া সাহা, জেলা শাসক গোভেকার ময়ূর, এসপি অজিত প্রতাপ সিং সহ অন্যান্যরা।
কাঁকড়াবনের অনুষ্ঠান সেরে ফেরার পথে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা বিশালগড় মহকুমা হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রীকে হাসপাতালে দেখে হতচকিত হয়ে যান উপস্থিত চিকিৎসকসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা। খুশির আবহ লক্ষ্য করা যায় রোগী এবং তাদের পরিবার প্রিয়জনদের মধ্যে। মুখ্যমন্ত্রী কর্তব্যরত চিকিৎসককে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন। কথা বলেন বেশ কয়েকজন রোগী এবং তাদের আত্মীয় পরিজনদের সঙ্গে। দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকের কাছ থেকে হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে অবহিত হন মুখ্যমন্ত্রী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন