আগরতলা, ১৪ আগস্ট : অখন্ড ভারতবর্ষ বিভাজনের মধ্য দিয়ে শুধু ভৌগোলিক বিভাজনই হয়নি, বিভাজিত হয়েছে আমাদের মানবতা, সংস্কৃতি ও পরম্পরা। বিভাজিত হয়েছে মানব সভ্যতাও। সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পাঞ্জাব ও বাংলার মানুষ। আজ বিকেলে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে বিভাজন বিভীষিকা স্মৃতি দিবস অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মহাত্মা গান্ধী চাননি ভারত বিভাজিত হোক। অনেক মুসলিম, শিখ বা অন্যান্য নেতৃত্বও চাননি ভারতবর্ষের বিভাজন হোক। দেশ বিভাগের ফলে মানুষকে অনেক দুঃখ-কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এই দুঃখ, দুর্দশার কথা তুলে ধরার জন্যই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা আরও বলেন, দেশ বিভাগের পর লক্ষ লক্ষ মানুষ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। দেশ বিভাজনের সময়ের ছবি দেখলে আমরা বুঝতে পারি ঐ সময়ে মানুষ কতটা দুঃখ, কষ্ট সহ্য করেছেন। তাদের দুঃখ-কষ্টের ইতিহাস আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। দেশভাগের ফলে নিপীড়িত সর্বস্বান্ত মানুষের বিভীষিকাময় ইতিহাস এই প্রজন্ম যেন ভুলে না যায় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২১ সালে প্রতিবছর ১৪ আগস্ট দিনটিকে বিভাজন বিভীষিকা স্মৃতি দিবস হিসেবে পালন করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখনও বিভাজনের সেই রেশ রয়ে গেছে। এরমধ্যেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতবর্ষকে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কাজ করছেন। আমরাও চাইছি আমাদের দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে।
অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষামন্ত্রী টিংকু রায় বলেন, সরকারি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা দেশভাগের বেদনার কথা জানতে পারছি। এরফলে নতুন প্রজন্ম উপকৃত হবে। অনুষ্ঠানে প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা বলেন, দেশভাগ মানবতার ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায়। এমন বিভাজন যেন আর না আসে। এর পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সেজন্যই এই দিনটি স্মৃতি দিবস পালন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, উন্নতি, প্রগতি, শান্তি বিভাজন দিয়ে আসে না। দেশ বিভাগের ফলে ত্রিপুরাও বিভাজিত হয়েছে। ঐ সময়ে ত্রিপুরার যারা নিপীড়িত সর্বস্বান্ত হয়েছেন আজ তাদের দুঃখও স্মরণ করার দিন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সত্যদেও পোদ্দার, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জগদীশ গণ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বার্তাসম্বলিত ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের লনে ভারত বিভাজনের স্মৃতি সম্বলিত বিভিন্ন ছবি প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। রবীন্দ্র ভবনের অনুষ্ঠানের পর একটি মিছিল শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে।
Dr Manik Saha : চলতি অর্থবছরে রাজ্যে ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০০টি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন