আগরতলা, ৪ এপ্রিল : জাতি এবং জনজাতি অংশের মানুষের সংস্কৃতির এক অপূর্ব মেলবন্ধন বিভিন্ন মেলার মধ্য দিয়ে ফুটে উঠে। রাজ্যের বর্তমান সরকার এই সমস্ত মেলার শ্রীবৃদ্ধির জন্য নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। আজ বিকালে মোহনপুর মহকুমা প্রশাসন, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর এবং ব্রহ্মকুন্ড মেলা কমিটি আয়োজিত ৩দিনব্যাপী ব্রহ্মকুন্ড মেলা ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা একথা বলেন। তিনি বলেন, মেলা মানেই বিভিন্ন অংশের মানুষের মিলন। রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন মেলার উন্নয়নের মধ্য দিয়ে এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তোলা যাবে। রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী কৃষ্টি ও সংস্কৃতি বিকশিত এবং পরিপুষ্ট হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যেসমস্ত এলাকাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে সেই সমস্ত এলাকার উন্নয়নের দিকে রাজ্য সরকার বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে। ধর্মীয় স্থানগুলিকে কেন্দ্র করে রাজ্যের সৌন্দর্যই শুধু বৃদ্ধি হচ্ছেনা, পর্যটন শিল্পও বিকশিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ধর্মীয় স্থানগুলিকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে পদক্ষেপ নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত পথেই ত্রিপুরায়ও বিভিন্ন ধর্মীয় স্থানের শ্রীবৃদ্ধির জন্য বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখার উপর গুরুত্ব আরোপ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের সরকার। জনগণের কল্যাণে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ণ করা হচ্ছে। মানুষ এগুলির সুফল ভোগ করছেন।
স্বাগত ভাষণে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বৃষকেতু দেববর্মা শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রেখে ৩ দিনব্যাপী এই মেলা উপভোগ করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ব্রহ্মকুন্ড মেলা রাজ্যের এক ঐতিহ্যবাহী মেলা। এই মেলা প্রাঙ্গণটি ঘিরে ১৪ কোটি টাকার একটি উন্নয়নমূলক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছর থেকেই এর কাজ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক ডা. বিশাল কুমার।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি বিশ্বজিৎ শীল, ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদের কার্যনির্বাহী সদস্য রবীন্দ্র দেববর্মা, হেজামারা বিএসি'র চেয়ারম্যান সুনীল দেববর্মা, মোহনপুর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান রাকেশ দেব, পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সদস্য জয়লাল দাস, ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান সমীর রঞ্জন ঘোষ, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য, মোহনপুর মহকুমার মহকুমা শাসক সুভাষ দত্ত প্রমুখ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর মুখ্যমন্ত্রী সহ অতিথিগণ মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেন।
এদিকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কয়েক ঘন্টা আগে দেখা দেয় বড়সড় বিপত্তি। ব্রহ্মকুণ্ডেশ্বর মন্দিরের ঠিক পেছনে বহু পুরনো একটি বটগাছ এদিন দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ ভেঙে পড়ে। এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় একটি সব্জি ব্যবসায়ীদের জন্য নির্দিষ্ট শেড ঘর। তবে অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচেন কয়েকজন ব্যবসায়ী সহ সাধারণ লোকজন। জানা গেছে মেলা প্রাঙ্গণে যখন চলছে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রস্তুতি, তখন হঠাৎই মন্দিরের পেছনের পুরনো বটগাছের একটি ডাল ভেঙে পড়ে। আশেপাশে থাকা লোকজন ঘটনা বেগতিক দেখতে পেয়ে চিৎকার করতে থাকেন । তাতে নিরাপদ জায়গায় সরে যান শেড ঘরের সব্জি ব্যবসায়ী সহ অন্যান্য লোকজন। এরপর কয়েক মুহূর্তেই ধীরে ধীরে প্রায় সবটা গাছেই ভেঙে পড়ে ওই শেড ঘরের উপর। প্রশাসনের লোকজনের তৎপরতায় সঙ্গে সঙ্গে গোটা মেলা চত্বরের ইলেকট্রিক পরিষেবা বন্ধ করে দেয়া হয়। আপৎকালীন পরিষেবায় চলে সারাইয়ের কাজ। অশোকাষ্টমী উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী মেলার উদ্বোধনের আগ মুহূর্তে মন্দির চত্বরের পুরনো বটগাছ ভেঙে পড়াকে, স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছেন না স্থানীয় শ্রদ্ধালুরা । চলছে নানা গুঞ্জন।
Sports Infrastructures : স্টেট স্পোর্টস কমপ্লেক্সে নবনির্মিত সিন্থেটিক টার্ফ ফুটবল মাঠ, সিন্থেটিক অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাক, সিন্থেটিক হকি মাঠের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন