আগরতলা, ০৩ মার্চ : ভারতের নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২০২৩ ত্রিপুরা বিধানসভার নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে ম্যাজিক সংখ্যা থেকে অনেকটাই দূরে শাসক দল বিজেপি। সরকারি কর্মচারীদের দেওয়া পোস্টাল ব্যালটে মাত্র ১৭ টি আসনে এগিয়ে বিজেপি আইপিএফ টি জোট। অপরদিকে ৪৩ টি আসনে এগিয়ে বিরোধী শিবির। ২রা মার্চ সকাল আটটা থেকে ৬০টি বিধানসভা আসনের ভোট গণনা শুরু হলে, প্রথমদিকে শুরু হয় পোস্টাল ব্যালট এর গণনা। এর পাশাপাশি সকাল ৮ঃ৩০ টা থেকে শুরু হয়ে যায় ইভিএমের গণনাও। পোস্টাল ব্যালট ও ইভিএম এর গণনা মিলিয়ে প্রথম দিকে ট্রেন্ড অনুযায়ী শাসক দলকে এগিয়ে থাকতে দেখে অনেকেই অনুমান করেন কর্মচারী ভোট একযোগে বিজেপির দিকে পড়েছে। এই ভেবে শাসকদলের সমর্থকরা সামাজিক মাধ্যমে কর্মচারী সমাজকে ধন্যবাদ জানাতেও শুরু করেন। কিন্তু সবার চক্ষু চরক গাছ হয়ে যায় ভারতের নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ওয়েবসাইটে দেওয়া পোস্টাল ব্যালটের হিসাব দেখে। এতে মাত্র ১৭ টি বিধানসভা আসনে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী থেকে সামান্য ভোটে এগিয়ে থাকতে দেখা যায় বিজেপি প্রার্থীদের।
উল্লেখ্য ২০১৮ সালে রাজ্যে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে প্রথমে কর্মচারীদের সপ্তম পে কমিশন দেয়া হয় । এর পর দেখা দেয় কোভিড অতিমারি। ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্যে যখন কর্মচারীদের বেতন কমিয়ে দেয়া হয় এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে কর্মচারীদের ৩ শতাংশ ডিএ দেয়া হয়। আইনি জটিলতায় দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা প্রমোশনের বিষয়টির ও নিয়ম মেনে সুরাহা করা হয়। পরবর্তী সময়ে ৫ শতাংশ ও ১২ শতাংশ ডিএ দেয়া হয় কর্মচারীদের। এতকিছুর পরেও কর্মচারী সমাজ কেন পিঠ দেখালো বিজেপিকে ? এই নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
বৃহস্পতিবার ফল প্রকাশের পর বিজেপির অভিজ্ঞ কর্মী সমর্থকদের মধ্যে অনেকেই বলতে থাকেন । এই রাজ্যে দ্বিতীয় বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শ্রমিক, কৃষক, বেকার এবং সাধারণ মানুষদের ভোটের মাধ্যমে । তাই এবার বেশি করে তাঁদের কথা ভাবতে হবে সরকারকে। অনেকেই আক্ষেপ করে বলেন, ইভিএম এর মাধ্যমে জনগণের দেওয়া ভোটে অমরপুর, বাধারঘাট, বাগমা, বিশালগড়, চন্ডিপুর, কাকড়াবন-শালগড়া, কল্যাণপুর, খয়েরপুর, মজলিশপুর, মনু, মাতাবাড়ি, নলছড়, পাবিয়াছড়া, রাজনগর, সুরমা, এবং সূর্যমনিনগর এই ১৭ টি আসন যদি ভারতীয় জনতা পার্টির দখলে না আসতো, তাহলে মোদী মানিক সাহার সরকারের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার স্বপ্ন থাকতো অধরা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন