DoNER Minister : আগরতলা-আখাউড়া রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধনে জি কৃষান রেড্ডি - ব্রহ্মকুন্ড বার্তা Brahamakundabartaa

ব্রহ্মকুন্ড বার্তা  Brahamakundabartaa

দেশ-বিদেশ ও ত্রিপুরার সব খবরের আপডেট

Post Top Ad

Translate

DoNER Minister : আগরতলা-আখাউড়া রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধনে জি কৃষান রেড্ডি

Share This

 


আগরতলা, ১১ এপ্রিল : ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে বর্তমানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রয়েছে। যা এই অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি ভালো দিক। মঙ্গলবার সচিবালয়ের ২নং কনফারেন্স হলে উদয়পুর মেলাঘর সড়কের উন্নীতকরণ এবং ২০ শয্যা বিশিষ্ট লংতরাইভ্যালি মহকুমা হাসপাতাল সম্প্রসারণের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করে কেন্দ্রীয় পর্যটন, সংস্কৃতি ও উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী (ডোনার) জি কিষাণ রেড্ডি একথা বলেন। অনুষ্ঠানে এছাড়াও তিনটি প্রকল্পের ভার্চুয়ালি শিলান্যাস করেন কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী। এই প্রকল্পগুলি হলো- মনু বনকুলস্থিত ধম্মদীপা স্কুলের বালিকা আবাস, আগরতলার রামনগরস্থিত ত্রিপুরেশ্বরী শিশু মন্দির বিদ্যালয়ের ভবন-কাম-শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও উদয়পুরের ফুলকুমারীতে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। 


অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় পর্যটন ও সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি দ্রুতগতিতে উন্নয়নের দিশায় এগিয়ে চলছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক সম্পদের পাশাপাশি শিল্প স্থাপনের উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। এগুলিকে কাজে লাগিয়ে উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। কেন্দ্রীয়মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই কেন্দ্রীয় সরকার উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সঙ্গে উন্নয়নের ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করছে। এছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় বিভিন্ন মন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ও বরিষ্ঠ আধিকারিকগণ এখন থেকে নিয়মিত উত্তর পূর্বাঞ্চলের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলি পরিদর্শন করবেন এবং উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি করবেন।


অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে রেল, সড়ক, বিমান ও জলপথের পরিকাঠামোগত উন্নয়নে গুরুত্ব সহ কাজ করছে। রেল যোগাযোগের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার বর্তমানে ৭৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ করছে। তিনি বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে আকাশপথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। বর্তমানে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে মোট ১৭টি বিমানবন্দর চালু রয়েছে। কেন্দ্রীয়মন্ত্রী বলেন, সড়কপথ ও জলপথের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে কেন্দ্রীয় সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। শিল্প স্থাপন সহ পর্যটন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে কর্ম পরিকল্পনা তৈরি করে কাজ করার জন্য বলেন কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী।


অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের ডোনার মন্ত্রকের সার্বিক সহযোগিতায় ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে পরিকাঠামোগত, সংস্কৃতিগত সহ বিভিন্ন বিষয়ে উন্নয়নের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সার্বিক উন্নয়নে আন্তরিক উদ্যোগ নিয়েছেন। ফলে গত ৯ বছর ধরে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। ফলে উন্নয়নের ক্ষেত্রে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সঙ্গে দিল্লির ব্যবধান অনেকটাই কমে গেছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী যে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ তা এই অঞ্চলের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের মাধ্যমেই প্রকাশ পাচ্ছে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা, মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, রাজস্ব দপ্তরের প্রধান সচিব পুনীত আগরওয়াল সহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান সচিব ও সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।




পরে কেন্দ্রীয় উত্তর পূর্ব উন্নয়ন, পর্যটন ও সংস্কৃতি মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডির  রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি নিয়ে এক পর্যালোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভায় পৌরহিত্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। সভায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির অগ্রগতি, বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। সভায় রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রী বিকাশ দেববর্ম, মুখ্যসচিব জে কে সিনহা সহ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের উচ্চপদস্থ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন। সভায় আলোচনাকালে কেন্দ্রীয় ডোনার, পর্যটন ও সংস্কৃতিমন্ত্রী জি কিযাগ রেড্ডি বলেন, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি রূপায়ণে সরকারি আধিকারিকদের আরও বেশি উদ্যোগী হয়ে কাজ করতে হবে। প্রকল্পগুলি রূপায়ণে ১০০ শতাংশ সাফল্যও সুনিশ্চিত করতে হবে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির সুফল সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের কাছে যাতে পৌঁছায় তার জন্য প্রশাসনিক আধিকারিকদের একযোগে কাজ করতে হবে। প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে কোনও ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হলে তা সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি ডোনার মন্ত্রকের নজরে নিয়ে আসার জন্য তিনি আধিকারিকদের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, দিল্লিতে গ্লোবাল ইনভেস্টমেন্ট সামিট অনুষ্ঠিত হবে। এই লক্ষ্যে আগামী দিনে রাজ্যে যেসমস্ত ক্ষেত্রে বিনিয়োগের ব্যাপক সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে সেই ক্ষেত্রগুলির তালিকা তৈরি করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের পরামর্শ দেন।




এদিকে উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি এদিন দুপুরে আগরতলা-আখাউড়া নতুন রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন। প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে এসে  তিনি আগরতলা রেল স্টেশনে যান এবং প্রস্তাবিত রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের কাজ থেকে খোঁজখবর নেন। পরিদর্শনের সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন পরিবহণ মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক সহ নর্থ ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ের চিফ ইঞ্জিনিয়ার (কনস্ট্রাকশন) পি বি পান্ডে ও রেললাইন নির্মাণ সংস্থা ইরকনের জেনারেল ম্যানেজার রমন শ্রিংলা। তাছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকগণ।


আগরতলা রেল স্টেশন পরিদর্শনের পর উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী নিশ্চিন্তপুর রেল স্টেশনটি পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি সংশ্লিষ্টদের সাথে এক পর্যালোচনা বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ে উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ বাতাবরণকে আরও সুদৃঢ় করতে এই রেল সংযোগ নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির “পূবে সক্রিয় হও’ এবং ‘প্রতিবেশি প্রথমে’ এই দুই নীতিতে বিশ্বাসী হয়ে এই কাজটিকে সংশ্লিষ্টদের আরও দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করা উচিত। 


কেন্দ্রীয় ডোনার মন্ত্রী বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়ন, চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে সহজে পণ্য আমদানি রপ্তানি, বৈদেশিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে আরও সুদৃঢ় করা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও উন্নততর করার ক্ষেত্রে এই রেল সংযোগ এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ভবিষ্যতে গ্রহণ করবে। ভারতীয় অংশের ৫.৪৬ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইন নির্মাণে ডোনার মন্ত্রক এবং বাংলাদেশের অংশের গঙ্গাসাগর রেল স্টেশন পর্যন্ত ৬.৭৮ কিলোমিটার রেললাইনের কাজ বিদেশ মন্ত্রকের অনুদানে নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অংশে জমি সংক্রান্ত কিছু সমস্যা রয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। 


কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন অচিরেই এই সমস্যার সমাধান হবে। তিনি বলেন, উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে আগামীদিনে এই বহুল আকাঙ্ক্ষিত রেল সংযোগ প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন হবে। এই কাজ যাতে আর কোনও বাধার সম্মুখীন না হয় তার জন্য কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মন্ত্রীদের কাছে অনুরোধ করে এ সংক্রান্ত সামগ্রিক উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানান। উল্লেখ্য, এই রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে গেলে আগরতলা থেকে কলকাতার দূরত্ব ভায়া ঢাকা হয়ে দাঁড়াবে ৫০০ কিলোমিটার। তখন প্রায় ১৬ ঘন্টায় কলকাতায় পৌঁছানো যাবে।



G. Kishan Reddy : ২ দিনের রাজ্য সফরে কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Bottom Ad