আগরতলা, ০৮ আগস্ট : মাফিয়া শব্দটিকে উৎখাত করতে হবে ত্রিপুরা থেকে। জমি জায়গা বিক্রি বাট্টা থেকে শুরু করে ঠিকাদারি কাজে, কোথাও যেন মাফিয়া শব্দটি না থাকে। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার জেলাস্তরের পুলিশ আধিকারিকদের সাথে বৈঠকের পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা। আগরতলার প্রজ্ঞাভবনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকের আলোচ্য সময়ে তিনি বলেন কাটমানি ও সিন্ডিকেট ব্যবস্থাকে কঠোর হাতে দমন করতে আরক্ষা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অবৈধভাবে রোহিঙ্গারা ত্রিপুরাকে করিডোর করে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে প্রবেশ করছে। এক্ষেত্রে পুলিশকে কঠোর নজরদারি রাখার জন্য বলা হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্ত এলাকা দিয়ে গরু পাচার রোধে সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশ স্টেশন এবং বিএসএফ-এর মধ্যে যথাযথ সমন্বয় রেখে কাজ করার জন্য বৈঠকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, বৈঠকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিও গুরুত্ব পেয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী জানান, নেশামুক্ত ত্রিপুরা গঠনে মাদক পাচার ও ব্যবহার বন্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে সরকার। রাজ্যে মাদক কারবারের সাথে যুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এবিষয়ে এদিনের বৈঠকে পুলিশ আধিকারিকদেরও প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, এবছর রাজ্য পুলিশের ১৫০তম বার্ষিকী উদ্যাপিত হচ্ছে যা অত্যন্ত গর্বের। এই উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে ত্রিপুরা পুলিশের উজ্জ্বল দৃষ্টান্তগুলি জনসমক্ষে তুলে ধরা যাবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের প্রতিটি পুলিশ স্টেশনে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবস্থা সহ সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণের বিষয়সমূহ নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে রাজ্যে সাইবার পুলিশ স্টেশনের উদ্বোধন করা হবে। অপরাধের হারের দিক থেকে ত্রিপুরার স্থান অনেকটাই নীচে রয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষ থানায় এসে যাতে তাদের সমস্যার কথা খোলাখুলি বলতে পারেন সেই বিষয়টি গুরুত্ব সহ দেখার জন্য বলা হয়েছে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে রাজ্য পুলিশে বিভিন্ন পদে পদন্নোতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশের বিভিন্ন স্তরে শূন্যপদগুলি পূরণেও সরকার পদক্ষেপ নেবে। বৈঠকে পুলিশের প্রয়াস সচেতনতা কর্মসূচির মাধ্যমে বাল্যবিবাহ রোধ করার বিষয়টি বৈঠকে প্রাধান্য পায়। মুখমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে আইন শৃঙ্খলার ব্যবস্থা এখন অনেকটাই উন্নত। আগামী দিনে সেটা যাতে অক্ষুন্ন থাকে সেই দিকে লক্ষ্য রেখে পুলিশ আধিকারিকদের কাজ করার কথা বলা হয়েছে। মুখমন্ত্রী বলেন, গত বিধানসভা নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এক্ষেত্রে বিরাট কৃতিত্ব রয়েছে রাজ্যের পুলিশের।
সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন বলেন, রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার এখন উন্নতি হয়েছে। রাজ্যে অবৈধ প্রবেশকারী বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের প্রবেশ রুখতে রাজ্য পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়েছে। এক্ষেত্রে বিরাট সংখ্যায় গ্রেপ্তারও হয়েছে। নেশামুক্ত ত্রিপুরা অভিযানে বিরাট সংখ্যায় মাদক দ্রব্য বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বৈঠকে রাজ্য পুলিশের ১৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে একটি লোগোর আবরণ উন্মোচন করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিনের বৈঠকে রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন ছাড়াও, অতিরিক্ত পুলিশ মহানির্দেশক সৌরভ ত্রিপাঠী, আইজিপি আর জি কে রাও, ডিআইজি মানচাক ইয়ার, জেলার পুলিশ সুপারগণ, মহকুমা পুলিশ আধিকারিকগণ, রাজ্যের বিভিন্ন থানার ওসি ও অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন, অতিরিক্ত পুলিশ মহানির্দেশক সৌরভ ত্রিপাঠী, আইজিপি আর জি কে রাও, ডিআইজি মানচাক ইয়ার, জেলার পুলিশ সুপারগণ, মহকুমা পুলিশ আধিকারিকগণ, রাজ্যের বিভিন্ন থানার ওসি ও অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন