আগরতলা, ২২ সেপ্টেম্বর : প্রজাপিতা ব্রহ্মকুমারী ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশের ইনচার্জ কবিতা বহেনজী শুক্রবার আকস্মিত ভাবে প্রয়াত হলেন। শুক্রবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ছয়টা নাগাদ আগরতলার একটি বেসরকারী হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর। তাঁর মরদেহ বনমালীপুর ও আড়ালিয়া আশ্রমে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়েই ছুটে যান মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা, সস্ত্রীক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার সহ অগনিত ভক্ত, গুনমুগ্ধ এবং বিশিষ্টজনেরা।
জানা যায়, ১৯৬৮ সালের ২৩ শে মার্চ বাংলাদেশে কবিতা বহেন জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব পেরিয়ে ধীরে ধীরে তিনি আধ্যাত্মিক চিন্তাভাবনায় যুক্ত হন। পরে ১৯৯৫ সালে প্রথম তিনি আগরতলায় ঈশ্বরীয় সেবার কাজে নিযুক্ত হন। ধীরে ধীরে আড়ালিয়া সহ বেশ কয়েকটি জায়গাতে মোট ১৬টি সেন্টার স্থাপন করেন। দুদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে উনি আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে গেছেন।
কবিতা বহেনজীর প্রয়াণের খবর পেয়ে আড়ালিয়ায় অবস্থিত প্রজাপিতা ব্রহ্মাকুমারী ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটে যান মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা। তিনি মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন । সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রজাপিতা ব্রহ্মকুমারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভক্তদের চিন্তা ভাবনা অনেকটাই আলাদা। তাঁরা মানুষ নিয়ে থাকতে পছন্দ করে, মানুষকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যখনই এই প্রতিষ্ঠানের থেকে ডাক পড়তো তিনি আসতেন এবং তাঁদের অনুষ্ঠান ও পূজার্চনা উপভোগ করতেন। মুখ্যমন্ত্রী কবিতা বেহেনজির অকাল প্রকাশে গভীর সমবেদনা ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
এদিকে, কবিতা বহেনজীর মৃত্যুর খবর পেয়ে আড়ালিয়া স্থিত প্রজাপিতা ব্রাহ্মকুমারী ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হন সস্ত্রীক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। আলাপ করেন কবিতা বহেনজীর অনুগামীদের সাথে। পরে শ্রী সরকার শ্রীমতি পাঞ্চালী ভট্টাচার্যীকে সঙ্গে নিয়ে শবদেহে পুষ্পার্ঘ অর্পন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে প্রাতন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কবিতা বহেনজী যেভাবে নেশার বিরোদ্ধে লড়াই করেছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। যুব সমাজকে নেশার করাল গ্রাস থেকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে কবিতা বেহেনজির ভূমিকা ছিল উল্লেখ যোগ্য। পরে বিকেলে, আড়ালিয়া স্থিত প্রজাপিতা ব্রহ্মাকুমারী ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উনার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বটতলা মহাশ্মাশানে এবং সেখানেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। কবিতা বহেনজীর অকাল প্রয়াণে রাজ্যে রাজযোগ মেডিটেশনের প্রচার প্রসারে দারুণ ক্ষতি হলো বলে মনে করছেন তাঁর গুণমুগ্ধরা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন