আগরতলা, ১১ জানুয়ারি : প্রয়াত হলেন প্রাক্তন শিক্ষক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কেশব মজুমদার । বৃহস্পতিবার আগরতলা রামনগরে নিজ ছেলের ভাড়া বাড়িতে অবস্থানকালে ভোর পাঁচটায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। গত কয়েক বছর যাবৎ এই বাড়িতেই তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে শয্যাশায়ী ছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
পরে প্রয়াত কেশব মজুমদারের মরদেহকে বিধানসভায় ও সচিবালয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। সকালে বিধানসভায় তাঁর মরদেহ নিয়ে আসা হলে, সেখানে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা। এছাড়াও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন, অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়, পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, বিরোধী দলনেতা অনিমেষ দেবর্বমা সহ বিধানসভার অন্যান্য সদস্য ও সদস্যাগণ।
পরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য একজন প্রাজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে হারালো। তিনি দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। বিভিন্ন দপ্তরের মন্ত্রী থাকাকালীন তিনি তাঁর দায়িত্বভার নিষ্ঠার সাথে পালন করেছেন। সচিবালয়ে প্রয়াত প্রাক্তন মন্ত্রী কেশব মজুমদারের মরদেহে মাল্যদান করে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী রতন লাল নাথ, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়ামন্ত্রী টিংকু রায়, সমবায় মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া, মুখ্যসচিব জে কে সিনহা প্রমুখ।
উল্লেখ্য প্রয়াত কেশব মজুমদার উদয়পুর রমেশ হাই স্কুলের শিক্ষকতা কাজে যোগ দিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি তিনি ছাত্র-যুব, শ্রমিক-কর্মচারীসহ জনগণের বিভিন্ন অংশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগঠিত করার ও এর বিকাশে সরাসরি ভূমিকা গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৮ সালে অবিভক্ত সি পি আই দলের সভ্যপদ লাভ করেন। এবং ১৯৬৪ সালে পার্টি ভাগ হলে তিনি সি পি আই (এম) দলে যোগ দেন।
কেশব মজুমদার ১৯৭৭ সাল থেকে লাগাতর বার তৎকালীন কাকড়াবন বিধানসভা আসন থেকে বিধানসভায় নির্বাচিত হন। ১৯৯৩ সাল থেকে ক্রমান্বয়ে দুটি মন্ত্রিসভায় তিনি শিক্ষা, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, রাজস্ব এবং পরিষদীয় বিভাগ ইত্যাদি পরিচালনায় দক্ষতার স্বাক্ষর রাখেন। ১৯৮৫ সালে সি পি আই (এম) এর দ্বাদশ রাজ্য সম্মেলনে কমরেড কেশব মজুমদার রাজ্য কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে পার্টির ২২তম রাজ্য সম্মেলনে তিনি স্বাস্থ্যগত কারণে রাজ্য কমিটি থেকে অব্যহতি নেন। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে সি পি আই (এম) ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন