আগরতলা, ০৪ ফেব্রুয়ারি : আগরতলার অটল বিহারী বাজপেয়ী রিজিওনাল ক্যান্সার সেন্টারে রবিবার বিশ্ব ক্যান্সার দিবস উদযাপন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে মূল অনুষ্ঠানের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা। প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী এই রোগের কারণ সম্পর্কে জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আধুনিক চিকিৎসায় ক্যান্সারের বিরুদ্ধে এখন লড়াই করা সম্ভব। কিন্তু এই রোগ যাতে না হতে পারে তার কারণগুলি সম্পর্কে সকলের অবগতি থাকা প্রয়োজন। যদি ঠিক সময়ে এই রোগের সনাক্তকরণ করা যায়, তাহলে এই রোগকে প্রতিহত করে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকা সম্ভব।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলের ৮টি রাজ্যেই মুখে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। চিকিৎসক হিসাবে অভিজ্ঞতার কথা ব্যক্ত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মূলতঃ পান-সুপারি, তামাক, সিগারেট ও অন্যান্য নেশ জাতীয় দ্রব্যাদির কু-অভ্যাসের ফলেই এই অঞ্চলে মুখের ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির মূল কারণ। এছাড়াও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মুখে, স্তন, হাড়, ফুসফুস ও জরায়ুতে ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা দেখা যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শরীরের কোন অংশে যদি ক্ষত বা স্ফীতি দেখা দেয় তাহলে অবহেলা না করে তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের পরিবারের সদস্যদেরও মনোবল বাড়ানোর ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, রাজ্যের অটল বিহারী বাজপেয়ী আঞ্চলিক ক্যান্সার সেন্টারটি উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে সেরা হাসপাতাল হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। আরো কিভাবে একে আধুনিক সুযোগ সুবিধা যুক্ত করে তোলা যায় তা সরকারিভাবে দেখা হবে। ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা মানবিক কারণেই বিনে পয়সায় হওয়া উচিত বলে মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন। তিনি এই রিজিওনাল ক্যান্সার সেন্টারটির আরো প্রচার দরকার বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। এর ফলে রাজ্যে যেখানে ক্যান্সার রোগ চিকিৎসার আধুনিক সুযোগ সুবিধা রয়েছে সেক্ষেত্রে বাইরে যাবার প্রণবতা অনেক কমবে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসার মাধ্যমে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া ক্যান্সার যোদ্ধাদের সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেন। তাছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী ক্যান্সার পরিষেবা প্রদানে সহায়তা করার জন্য তিনটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে সংবর্ধিত করেন। বিশ্ব ক্যান্সার দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য সচিব কিরণ গিত্যে ও জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধিকর্তা ডি কে চাকমা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্যান্সার হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট ডাঃ শিরোমণি দেববর্মা। অনুষ্ঠানে ক্যান্সার যোদ্ধা দেবাশিস দাস রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন