আগরতলা, ০১ এপ্রিল : অষ্টম পে কমিশন গঠন করার বিষয়টি রাজ্য সরকারের বিবেচনাধীন। উপযুক্ত সময়ে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে বিধায়ক গোপাল চন্দ্র রায়ের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় সরকার অষ্টম পে কমিশন গঠন করার প্রস্তাবের ঘোষণা দেন। এখন পর্যন্ত ভারতের কোনও রাজ্যই অষ্টম পে কমিশন গঠনের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। ত্রিপুরা সরকারও উপযুক্ত সময়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মনের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ষোড়শ অর্থ কমিশনের কাছে রাজ্যের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে সবকিছু জানানো হয়েছে। অর্থ কমিশন রাজ্যের আর্থিক অবস্থার প্রশংসা করে গেছে। তিনি বলেন, মহার্ঘভাতা রাজ্য সরকারের কর্মচারী ও পেশনারদের নিয়মিতভাবে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকার কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের মহার্ঘভাতা প্রদানের যে ব্যবধান রয়েছে তা ক্রমান্বয়ে কমানোর প্রচেষ্টা করছে।
এদিকে বিধানসভায় রেফারেন্স পিরিয়ডে বিধায়ক কল্যাণী সাহা রায়ের জনস্বার্থে আনা এক নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা জানান, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ব্যবসায়ীক প্রধান আওয়াধেশ সিংয়ের নেতৃত্বে একটি রিলায়েন্সের প্রতিনিধিদল গত ২২ মার্চ আগরতলা সফর করে রাজ্য সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। বৈঠকে ত্রিপুরায় রিলায়েন্সের বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, রিলায়েন্স গ্রুপ ত্রিপুরার প্রাকৃতিক সম্পদগুলি ব্যবহার করে রাজ্যের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে এমন কিছু মূলক্ষেত্রগুলি বৈঠকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব ক্ষেত্রের মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক গ্যাস, বাঁশ, রাবার, কৃষি ও উদ্যানজাত পণ্য, ঔষধি গাছপালা ইত্যাদি। বৈঠকে এছাড়াও দেশের তৃতীয় আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে এবং রাজ্যের বড়সংখ্যক প্রযুক্তিগত দক্ষ কর্মীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ত্রিপুরা ডাটা সেন্টার পলিসি, ২০২১ কাজে লাগিয়ে রিলায়েন্স জিওকে আইটি এবং আইটিইএস'র ক্ষেত্রে সুবিধাজনক শর্তে তাদের পরিষেবা সম্প্রসারণ করার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়াও আগরতলায় একটি বিপিও কল সেন্টার স্থাপন করার জন্য রিলায়েন্স জিওকে বলা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের ইনোভেশন এবং ইনকিউভেশন পার্ক স্থাপনের জন্য রিলায়েন্স জিওকে তথ্য প্রযুক্তি দপ্তরের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করার জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে। তিনি জানান, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ যেহেতু বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ শক্তি উৎপাদন কোম্পানি তাই রাজ্যে প্রায় ৫৬০ এমএমটি হাইড্রো কার্বন সম্পদ অনুসন্ধান এবং উৎপাদনে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এছাড়াও ত্রিপুরায় একটি ইউরিয়া সার উৎপাদন ইউনিট স্থাপনের জন্য রিলায়েন্সকে উৎসাহিত করা হয়েছে। রিলায়েন্স প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এছাড়াও বাঁশ সম্পদ থেকে এথানল উৎপাদন, ইকো ট্যুরিজম এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ, রাবার কাঠ প্রক্রিয়াকরণ, কৃষি এবং উদ্যানজাত পণ্য, হস্ততাঁত ও হস্তকারু ইত্যাদি ক্ষেত্রে রিলায়েন্সকে বিনিয়োগ করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে, এই বিনিয়োগের সুযোগগুলি বাস্তবায়নের জন্য রিলায়েন্স গ্রুপের উপযুক্ত কর্মকর্তা প্রতিনিধিদল রাজ্যে আসবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন