বিশ্রামগঞ্জ, ২৯ মে : ত্রিপুরা বর্তমানে সবদিক দিয়েই পুরানো ধ্যান ধারণাকে পেছনে ফেলে উন্নয়নের নতুন ধারায় এগিয়ে যাচ্ছে। তাই রাজ্য সরকার কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সহ সমস্ত মৌলিক বিষয়ে নতুন নতুন সংস্কার করছে। বৃহস্পতিবার বিশ্রামগঞ্জের শচীন দেববর্মণ স্মৃতি কলাক্ষেত্রে আয়োজিত বিকশিত কৃষি সংকল্প অভিযানের সূচনা করে একথাগুলি বলেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা। সারা দেশের সাথে আজ ত্রিপুরাতেও বিকশিত কৃষি সংকল্প অভিযানের সূচনা করে মুখ্যমন্ত্রী তিনটি কৃষি রথের ফ্ল্যাগ অফ করেন। সারা রাজ্যে এরকম ২৪টি কৃষি রথ জেলা ও মহকুমাগুলিতে পরিক্রমা করবে। এই অভিযান ২৯ মে থেকে শুরু হয়ে ১২ জুন পর্যন্ত চলবে।
মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা বলেন, কৃষি ক্ষেত্রে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে কিভাবে উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায় ও তার সঙ্গে কৃষকদের আয় বৃদ্ধি করা যায় এ লক্ষ্যেই বিকশিত কৃষি সংকল্প অভিযানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কৃষি গবেষণাগারের সাফল্যকে সরাসরি কৃষি জমিতে বাস্তবিক প্রয়োগ করে সাফল্য পাওয়ার লক্ষ্য নিয়েই এই অভাবনীয় অভিযানের সূচনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, অন্নদাতাদের আর্থ সামাজিক শক্তিশালী করে দেশের সার্বিক উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার বদ্ধপরিকর। এজন্যই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই অভিযানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগে কৃষকগণ আগামীদিনে মাটির উর্বরতার পরীক্ষা সহ বিভিন্ন দিক দিয়ে সহায়তা পাবেন। কৃষি জমিকে অধিক উৎপাদনশীল করে তোলার জন্য কৃষকদের প্রযুক্তিগতভাবে সচেতন হতে হবে। পূর্বাভাস অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে বৃষ্টিপাতের আগাম তথ্য জেনে কৃষক তার জমিতে ফসল উৎপাদনের পরিকল্পনা করে স্বয়ম্ভর হতে পারবেন।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, কৃষি সংকল্প অভিযানে কৃষি রথগুলি কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে কৃষকদের অবহিত করবে। এছাড়া প্রযুক্তি কিভাবে ব্যবহার করতে হবে সেই সম্পর্কে কৃষকদের সচেতন করা হবে। কৃষকদের সঙ্গে কৃষি বিজ্ঞানী ও আধিকারিকগণ সরাসরি কথা বলবেন।
অনুষ্ঠানে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, এই অভিযানের লক্ষ্য হচ্ছে ল্যাব টু ল্যান্ড। অর্থাৎ গবেষণাগারের পরীক্ষালব্ধ ফলকে সরাসরি কৃষি জমিতে নিয়ে পৌছানো। এই জন্য ২৯ জুন থেকে প্রতিদিন ৭২টি করে মোট ৮৬৪টি সভা আয়োজিত হবে যেখানে কৃষকগণ সরাসরি কথা বলবেন কৃষি বিজ্ঞানীদের সঙ্গে। কৃষিমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের বিষয়ে কৃষকদের বিশদে সচেতন করা হবে। কৃষকদের আরও বেশি সচেতন ও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী দুইজন কৃষককে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেন। এছাড়াও কৃষকদের মধ্যে বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়, সিপাহীজলা জেলার জেলাশাসক ও সমাহর্তা ডা. সিদ্ধার্থ শিব জয়সওয়াল, কৃষি দপ্তরের অধিকর্তা ড. পিবি জমাতিয়া, সিপাহীজলা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ড. শতভিষা সরকার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিপাহীজলা জিলা পরিষদের সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন