আগরতলা, ০৬ মে : সারা দেশ তথা রাজ্যের সাথে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায়ও আগামীকাল অসামরিক প্রতিরক্ষা বিষয়ক এক মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের ভিডিও কনফারেন্স হলে এ বিষয়ে আয়োজিত এক প্রস্তুতি সভায় জেলাশাসক ও সমাহর্তা ডা. বিশাল কুমার একথা জানান। সভায় নয়াদিল্লিতে এই বিষয়ে অনুষ্ঠিত মহানির্দেশনালয় অগ্নিনির্বাপক সেবা, নাগরিক সুরক্ষা এবং গৃহ রক্ষক নাগরিক সুরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত সভার সাথেও ভিডিও প্রদর্শনের মাধ্যমে মতবিনিময় করা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলাশাসক কার্যালয়ের আধিকারিকগণ, আরক্ষা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সহ বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকগণ।
সভায় পশ্চিম জেলার জেলাশাসক ডা. বিশাল কুমার জানান, আগামীকাল আগরতলার উমাকান্ত মাঠে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হবে বিকাল ৪টায়। সেখানে সিভিল ডিফেন্স এক্সারসাইজ অনুষ্ঠিত হবে। এতে অংশগ্রহণ করবে ডিস্ট্রিক্ট কন্ট্রোলার, জেলাস্তরের বিভিন্ন আধিকারিক, সিভিল ডিফেন্স, ওয়ার্ডেনস, স্বেচ্ছাসেবকরা, হোমগার্ড কর্মীগণ, এন.সি.সি, এন.এসএস, এন.ওয়াই.কে.এস, বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক শিক্ষিকাগণ এবং স্বাস্থ্যকর্মীগণ। যে কোনও যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কীভাবে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে হবে এবং এই পরিস্থিতির মোকাবিলা কীভাবে করতে হবে এসব বিষয়ে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। জেলাশাসক ডা. বিশাল কুমার সমস্ত দপ্তরের আধিকারিকদের আগামীকাল উমাকান্ত মাঠে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির প্রভাব আমাদের উত্তর পূর্বাঞ্চলেও পড়তে পারে। সেজন্য আমাদের সকলকে প্রস্তুত থাকতে হবে। এই লক্ষ্যেই আগামীকাল সারা দেশের সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। তিনি পশ্চিম জেলায়ও এই মহড়া সফল করার জন্য সকলের সহযোগিতার আহ্বান জানান।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আগামীকাল একই সময়ে উমাকান্ত মাঠের সাথে জিরানীয়া মহকুমা ও মোহনপুর মহকুমায়ও মহকুমা প্রশাসনের উদ্যোগে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। ৪টা ৫ মিনিটে ওয়ার্নিং সাইরেন বাজানো হবে এবং তখন বিদ্যুৎ সংযোগ চলে যাবে। সাড়ে ৪টায় হাসপাতাল, বিদ্যুৎ বিভাগের ও স্বেচ্ছাসেবকদের সতর্ক করার জন্য সাইরেন বাজানো হবে। সাড়ে ৫টায় সম্পূর্ণ অ্যালার্ট সাইরেন বাজানো হবে, তখন সমস্ত সুরক্ষা ব্যবস্থার কর্মীগণ তাদের কাজ শুরু করে দেবেন। মাঠে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা থাকবে। যুদ্ধে আহতদের জিবিতে নিয়ে যাওয়া হবে অর্থাৎ উমাকান্ত মাঠ থেকে জিবি হাসপাতাল পর্যন্ত এই মহড়া অনুষ্ঠিত হবে।
পরে মহাকরণে এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাজস্ব দপ্তরের সচিব ব্রিজেস পান্ডে এই বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, ভারতে সিভিল ডিফেন্স গঠিত হয়েছিল সিভিল ডিফেন্স আইন, ১৯৬৮ অনুসারে, যার মূল লক্ষ্য হলো শত্রু আক্রমণ ও দুর্যোগের সময় প্রাণ ও সম্পত্তির সুরক্ষা এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুসারে, আগামী ৭ই মে ২০২৫ তারিখে ত্রিপুরার সমস্ত জেলায় একটি ব্যাপক সিভিল ডিফেন্স মক ড্রিল পরিচালিত হবে। এই মহড়াটি জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (DDMA) ও জেলা সিভিল ডিফেন্স কর্পস-এর সমন্বয়ে সম্পন্ন হবে, যেখানে বিভিন্ন জরুরি ও দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া সংস্থা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে।
রাজস্ব দপ্তরের সচিব বলেন, এই মহড়ার উদ্দেশ্য হলো শত্রু আক্রমণ ও জরুরি পরিস্থিতিতে সিভিল ডিফেন্স ইউনিট এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রস্তুতি, কার্যকারিতা এবং পারস্পরিক সমন্বয় মূল্যায়ন করা। মহড়ায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে, সতর্কতা সিস্টেম পরীক্ষা, সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া ও উদ্ধার কার্যক্রম, জননিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা এবং সংস্থাগুলোর পারস্পরিক সমন্বয়।
শ্রী পান্ডে বলেন, প্রশিক্ষিত সিভিল ডিফেন্স স্বেচ্ছাসেবকরা রাজ্যের সব জেলায় ছড়িয়ে রয়েছেন এবং তাঁরা এই মহড়ায় সক্রিয়ভাবে অংশ নেবেন। তাঁরা সংকট মোকাবিলায় অন্যান্য প্রধান প্রতিক্রিয়াকারী সংস্থার সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কাজ করবেন। এদিনের সিভিল ডিফেন্স মক ড্রিলে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হবে, এয়ার রেইড, সতর্কতা প্রচার, সরিয়ে নেওয়া এবং উদ্ধার কার্যক্রম, প্রাথমিক চিকিৎসা ও চিকিৎসা সহায়তা, অগ্নিনির্বাপন, জরুরি পরিষেবা পুনরুদ্ধার। তিনি জনসাধারণকে অনুরোধ করেন এই মহড়ার সময় শান্ত থাকতে এবং নির্ধারিত সুরক্ষা নির্দেশিকা মেনে চলতে।
Waqf Amendment : সুপ্রিম কোর্টে ওয়াকফ শুনানি শুনলেন না প্রধান বিচারপতি
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন