আগরতলা, ১৯ জুলাই : মঙ্গলবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে জিবিপি হাসপাতালে প্রয়াত হলেন বক্সনগর কেন্দ্রের নবনির্বাচিত বিধায়ক সামসুল হক্। সিপিআইএম দলের এই সংখ্যালঘু নেতার অকাল প্রয়াণে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক শোক পরিলক্ষিত হয় । মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা নবনির্বাচিত এই বিধায়কের মৃত্যুতে গভীর শোক করেছেন। শোক ব্যক্ত করেছে সিপিআইএম রাজ্য কমিটিও।
জানাগেছে মঙ্গলবার ক্যাপিটেল কমপ্লেক্সের বিধায়ক আবাসে অবস্থানকালীন রাত ১ টা নাগাদ বুকে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করেন সামসুল হক্। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে জি বি হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে উপস্থিত চিকিৎসকরা তাঁর চিকিৎসা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, চার ছেলে, পরিজন ও অসংখ্য গুনমুগ্ধদের রেখে যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর।
উল্লেখ্য ১৯৭৪ সালে কৃষক আন্দোলনের মাধ্যমে সামসুল হক্ সি পি আই এম দলের সদস্যপদ নেন। প্রথমত তিনি তাঁর আবাসিক এলাকা বক্সনগরে তাঁর কর্মক্ষেত্র সীমাবদ্ধ রাখলেও ক্রমান্বয়ে সমগ্র সোনামুড়া মহকুমায় কৃষকদের সংগঠিত করার কাজে একজন বিশ্বস্ত নেতৃত্ব হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। সামসুল হক্ সিপিআইএম পার্টির সোনামুড়া সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য এবং সিপাহিজলা জেলা কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য ছিলেন। ২০১৮ সালে দলের ২২ তম রাজ্য সম্মেলনে তিনি সিপিআইএম রাজ্য কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ২০২৩ সালে বিধানসভা নির্বাচনে প্রথমবারের মতো সিপিআইএম দলের টিকিটে বিধানসভায় পদার্পণ করেন শামসুল হক। বিধায়ক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণের মাত্র চার মাসের মাথায় তার হঠাৎ করে গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা বক্সনগর এলাকায়।
রাজ্য বিধানসভার সদস্য সামসুল হকের প্রয়াণে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। শোকবার্তায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বক্সনগর কেন্দ্রের বিধায়ক সামসুল হকের আকস্মিক প্রয়াণে আমি গভীর মর্মাহত। এবারেই প্রথম তিনি পবিত্র বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার অকাল প্রয়াণে আমরা একজন স্বজনকে হারালাম। মুখ্যমন্ত্রী পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার নিকট তার বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করেন। এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা ব্যক্ত করেন। বিধায়ক সামসুল হকের প্রয়াণে শোক ব্যাপ্ত করেছেন বিরোধী দলনেতা অনিমেষ দেববর্মাও।
প্রয়াত বিধায়ক সামসুল হক-এর মরদেহ জিবি হাসপাতাল থেকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় বিধানসভা ভবনে। সেখানে তাকে অন্তিম শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল, মন্ত্রী টিংকু রায়, মুখ্য সচেতন কল্যাণী রায়, বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন, নির্মল বিশ্বাস, শ্যামল চক্রবর্তী, নয়ন সরকার, কিশোর বর্মন সহ অন্যান্যরা।
পরে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় সিপিআইএম ত্রিপুরা রাজ্য দপ্তরে। এরপর প্রয়াত সামসুল হকের পার্থিব দেহ সিপিআইএম সোনামুড়া মহকুমা কার্যালয়ের সামনে রাখা হয়। সেখানে দলের স্থানীয় নেতৃত্ব সহক অন্যান্য রা প্রয়াত বিধায়কের মরদেহে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। এরপর একটি শোক মিছিলের মধ্য দিয়ে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
Pisciculture : ২৩তম জাতীয় মৎস্যচাষি দিবস উপলক্ষে ফটিকরায়ে অনুষ্ঠিত রাজ্যভিত্তিক কর্মশালা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন