আগরতলা, ১০ জুলাই : রাজ্যে গত ৩ বছরে ১০১ কোটি ৬৬ লক্ষ ৪২ হাজার ১১২ টাকার বেআইনী নেশাসামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই সময়ে বেআইনী নেশাসামগ্রী ক্রয় বিক্রয়ের সঙ্গে যুক্ত ২ হাজার ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা লিখিত উত্তরে এই তথ্য জানান।
বিধায়ক কিশোর বর্মন এবং বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণের আনা প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, অবৈধ নেশাসামগ্রীর উৎস সন্ধানের লক্ষ্যে রাজ্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি জানান, কিছু গুরুত্বপূর্ণ এনডিপিএস মামলা তদন্তের জন্য ত্রিপুরা ক্রাইম ব্রাঞ্চের অধীন সিঁটকে হস্তান্তর করা হয়েছে যাতে তদন্তের মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধের নেটওয়ার্ক, অর্থদাতা, আন্তঃরাজ্য যোগসূত্র ইত্যাদি উদ্ঘাটন করে মূল অপরাধীকে চিহ্নিত করা হয়। আগরতলায় নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো-র একটি শাখা স্থাপনের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, গাঁজা গাছ ধ্বংসের জন্য নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। একটি ফুল বডি স্ক্যানার কেনার জন্য প্রস্তাব বিবেচনাধীন আছে যাতে নেশাসামগ্রী বহনকারী গাড়ির স্ক্যান করে নেশা দ্রব্য সনাক্ত করা যায়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এনডিপিএস মামলার তদন্তকার্যের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আরক্ষা বাহিনীর কর্মীদের নরসিংগয়স্থিত কেটিডিএস পুলিশ ট্রেইনিং একাডেমিতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। নিয়মিত প্রয়াস কর্মসূচির মাধ্যমে স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের এবং জেলা পুলিশের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে নেশাবিরোধী সচেতনতা, প্রচারাভিযান চালানো হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী সভায় জানান, রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকায়, ফুটবল, ক্রিকেট ইত্যাদি খেলার কর্মসূচির মাধ্যমে নেশাদ্রব্য ব্যবহারের ক্ষতিকারক দিকগুলি সম্বন্ধে যুবক-যুবতীদের সচেতন করা হয়ে থাকে। নেশাসক্ত যুবক-যুবতীদের অভিভাবকরা যাতে তাদের ছেলেমেয়েদের নেশা মুক্তি কেন্দ্রে পাঠান তার জন্য উৎসাহিত করা হয়ে থাকে। এছাড়াও নেশাদ্রব্যের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে পুলিশ এবং টিএসআর কর্তৃক সিভিক অ্যাকশান প্রোগ্রাম সংঘটিত করা হয়ে থাকে। পিআইটিএনডিপিএস আইনে গ্রেপ্তারকৃত অভিযুক্তরা যাতে কোর্টে সহজে জামিন পেতে না পারে তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত পর্যায়ে পাবলিক প্রোসিকিউটর এবং এডিশানাল পাবলিক প্রেসিকিউটরদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। এনডিপিএস মামলায় জামিনপ্রাপ্ত সকল অভিযুক্তদের উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে।
ট্রেজারি বেঞ্চের মুখ্যসচেতক কল্যাণী সাহা রায় এবং বিধায়ক রঞ্জিত দেববর্মার যৌথভাবে আনিত আরেকটি প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা জানান, তেলিয়ামুড়া মহকুমার বিভিন্ন জনবসতি সংলগ্ন এলাকা দিয়ে প্রবাহিত খোয়াই নদীর পাড় ভাঙ্গণ রোধে পূর্ত দপ্তরের জলসম্পদ বিভাগ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভাঙ্গণ রোধের জন্য দু'টি স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। যার মোট দৈর্ঘ্য ২০০ মিটার৷ এই দু'টি জায়গার ভাঙ্গণ রোধ করার জন্য এস্টিমেট তৈরী করে অর্থ দপ্তরের কাছে পাঠানো হয়েছে অনুমোদনের জন্য। অনুমোদন পেলে এবং প্রয়োজনীয় অর্থের ব্যবস্থা হলে কাজ হাতে নেওয়া হবে। বিধায়কগণের আরেকটি প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রামচন্দ্রঘাট বিধানসভার অন্তর্গত দ্বারিকাপুর সরকার পাড়া, গৌরাঙ্গ টিলার দক্ষিণ আলেপসা গ্রাম এবং কালিবাড়ি এলাকায় খোয়াই নদীর পাড় ভাঙ্গণ প্রতিরোধ করার কাজ পূর্ত দপ্তরের বিবেচনাধীন রয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন