নয়াদিল্লি, ৯ সেপ্টেম্বর : নতুন দিল্লীর ভারত মন্ডপমে শনিবার জি ২০ শিখর সম্মেলনের সূচনা হয়েছে। সবকা সাথ সবকা বিকাশের ভাবনাকে প্রাধান্য দিয়ে ভারত, আফ্রিকাকে জি ২০র স্থায়ী সদস্যপদ দিতে প্রস্তাব করেছিল। শিখর সম্মেলনের ‘এক পৃথিবী’ শীর্ষক প্রথম অধিবেশনের ভাষণে শ্রী মোদী বলেন, ভারতের জি ২০ সভাপতিত্ব দেশের ভিতরে এবং বাইরে ‘সবকা সাথ’-এর এক অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতীক হয়ে উঠেছে। কোটি কোটি ভারতীয়কে সঙ্গে নিয়ে এই সম্মেলন জনগণের জি ২০ সম্মেলন হয়ে উঠেছে।জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, আফ্রিকী ইউনিয়নের প্রধান আজিল আসৌমানিকে স্থায়ী সদস্যের আসন গ্রহণ করতে আমন্ত্রণ জানান।
G-20 শিখর সম্মেলনে নতুন দিল্লীর ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়েছে । আজ এক সাংবাদিক বৈঠকে বিদেশমন্ত্রী ডক্টর এস জয়শঙ্কর বলেন, ভারতের জি-টোয়েন্টি সভাপতিত্বের মূল ভাবনা হলো, এক-পৃথিবী, এক-পরিবার এবং এক ভবিষ্যৎ। ফলে সম্মিলিত উন্নয়নের ওপরেই ভারত সর্বদা জোর দিয়েছে। ভারতের সভাপতিত্বে ১২৫-টি দেশ গ্লোবাল সাউথের পক্ষে কণ্ঠস্বর আরও জোরালো করেছে।
এদিকে ভারত আজ জি-টোয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্ব জৈব জ্বালানি জোটের সূচনা করেছে। ভারত ছাড়াও, আমেরিকা, ইটালি, বাংলাদেশ সহ ১১-টি দেশ এই জোটে রয়েছে। জি-টোয়েন্টি অধিবেশন শ্রী মোদী, জ্বালানি মিশ্রণের ক্ষেত্রে সব দেশের এক যোগের কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, পেট্রলে ইথানল মিশ্রণের পরিমাণ ২০ শতাংশ পর্যন্ত নিয়ে যেতে উদ্যোগ গ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে। পৃথিবীর সব দেশকেই এই বিশ্ব জৈব জ্বালানি জোটে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপারে ভারত দীর্ঘ দিন ধরেই আন্তর্জাতিকস্তরে মুখ্য ভূমিকা পালন করে এসেছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকটের মোকাবিলায় ভারত নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। সংযুক্ত আরব আমীরশাহীর কনসুল জেনারেল মাজিদ আল সুওয়াদি, কপ- টোয়েন্টি এইট ও জি-টোয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলনের পূর্বে একটি ভাষণে বলেছেন, ভারতবর্ষ বিশ্বের কণ্ঠস্বর হিসেবে কাজ করছে। সংযুক্ত আরব-আমীরশাহী ও ভারতবর্ষের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার বিষয়ে তিনি মত প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ভারতের জি-২০ সভাপতিত্ব সমগ্র বিশ্বে বহুকাঙ্খিত রূপান্তরমূলক পরিবর্তন আনতে সহায়তা করবে। নতুন দিল্লীতে জি-২০ শিখর সম্মেলন প্রসঙ্গে এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘গ্লোবাল সাউথ’ বা দক্ষিনী বিশ্বের উন্নয়নের এজেন্ডার সঙ্গে ভারতের সংকল্প পুরোপুরি সামঞ্জস্যপুর্ন। মহাউপনিষদ থেকে অনুপ্রাণিত ভারতের ‘এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যত'-এর ভাবনা উন্নয়নশীল দেশগুলি তথা গোটা বিশ্বেই গভীর অনুরণন ফেলেছে। যেসময় পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে বিচ্ছিন্নতাবাদ, সংঘাত ও অবিশ্বাসের বাতাবরণ মাথা চাড়া দিচ্ছে; সেসময় ভারতের জি-২০ সভাপতিত্ব নতুন পথের সন্ধান দেবে বলে অ্যান্তোনিও গুতেরেস আশা প্রকাশ করেছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন