Budget 2024-25 : বিধানসভায় পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী, প্রস্তাবিত বাজেটকে জনকল্যাণমুখী ও ভবিষ্যতের দিশারী বললেন মুখ্যমন্ত্রী - ব্রহ্মকুন্ড বার্তা Brahamakundabartaa

ব্রহ্মকুন্ড বার্তা  Brahamakundabartaa

দেশ-বিদেশ ও ত্রিপুরার সব খবরের আপডেট

Post Top Ad

Translate

Budget 2024-25 : বিধানসভায় পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী, প্রস্তাবিত বাজেটকে জনকল্যাণমুখী ও ভবিষ্যতের দিশারী বললেন মুখ্যমন্ত্রী

Share This


 আগরতলা, ০১ মার্চ : অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় শুক্রবার বিধানসভায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য মোট ২৭৮০৪.৬৭ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন। বাজেটে রাজ্যে নিজস্ব রাজস্ব শুল্ক অনুমান করা হচ্ছে ৩ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে তুলনায় ১১.৫৫ শতাংশ বেশি। রাজ্যের অনুমিত মূলধন খরচ ৬,৬৩৩.৮০ কোটি টাকা, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় ২৩.৮০ শতাংশ বেশী ।


চলতি অর্থবছরের পূর্ণাঙ্গ বাজেট নিয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা বলেন, এই বাজেট জনকল্যাণমুখী, ভবিষ্যতের দিশারী এবং বিকাশমূলক বাজেট। প্রস্তাবিত বাজেটে মহিলা, শিক্ষার্থী, যুব সম্প্রদায়, তৃতীয় লিঙ্গ, জনজাতি, তপশিলী জাতি, ওবিসি, সংখ্যালঘু, কর্মচারি, পেনশনার সহ সমাজের সমস্ত অংশের মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করা হয়েছে।  নিজ অফিসকক্ষে সাংবাদিকদের কাছে বাজেটের উপর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের প্রতিটি ক্ষেত্রকেই গুরুত্ব দিয়ে এবারের বাজেট তৈরি করা হয়েছে। বাজেটে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ১৭২৬.২৩ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। কৃষি ও কৃষি সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রেরজন্য বাজেটে ১৭২১.৯৪ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় ১৯.৮৮ শতাংশ বেশী। এবারের বাজেটে শিক্ষা ক্ষেত্রে ৫৫০৮.৬৩ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় ১১.৫৪ শতাংশ বেশী।



 মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাজেটে উত্তর ত্রিপুরার যুবরাজনগর এবং পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার পুরাতন আগরতলায় দুটি নতুন কৃষি মহকুমা খোলার প্রস্তাব রয়েছে। অরুন্ধতীনগরস্থিত রাজ্য কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে একটি রেসিডুয়েল টেস্টিং ল্যাব এবং একটি 'জার্ম প্লাজম প্রিজার্ভেশন সেন্টার' স্থাপন করা হবে। এরজন্য বাজেটে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ৮টি নতুন কৃষি উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে, যার জন্য ২৩ কোটি ৭১ লক্ষ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। তৈদুতে ইন্দো-ডাচ প্রকল্পে সাইট্রাসের উপর একটি 'সেন্টার অব এক্সিলেন্স' গড়ে তোলা হবে। এই প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গুণমান সম্পন্ন ফল, ফুল, শাকসব্জি চাষের লক্ষ্যে ইন্দো-ইজরাইল অ্যাকশন প্ল্যানের অন্তর্গত লেম্বুছড়ায় ফুলের উপর একটি 'সেন্টার অব এক্সিলেন্স' গড়ে তোলা হবে। এরজন্য ১০ কোটি টাকা ব্যয় করার পরিকল্পনা রয়েছে।


 মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মাছের পোনার উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে চারটি মৎস্যচাষ জ্ঞান কেন্দ্র এবং একটি রাজ্য মৎস্য চাষ সচেতনতা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এর জন্য ব্যয় হবে ১৭ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা। আর আই ডি এফ-এর অর্থানুকুল্যে ২১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে। এরজন্য ১২৩ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে। পিএম-ডিভাইন প্রকল্পে আগরতলা সরকারী মেডিকেল কলেজে এবং জিবিপি হাসপাতাল কমপ্লেক্সে ২০০ শয্যা বিশিষ্ট মাল্টি কেয়ার হেলথ ইউনিট নির্মাণ করা হবে। এরজন্য বাজেটে ১৯২ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের মিশন শক্তির আওতায় নিঃস্ব মহিলাদের জন্য মাতাবাড়ি এবং তেলিয়ামুড়ায় দুটি 'শক্তি সদন' স্থাপন করা হবে। এরজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা।


মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাবার সিট প্রক্রিয়াকরণের জন্য রাজ্যের জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় ৫০টি 'স্মোক হাউজ' তৈরী করা হবে। এরজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। ৫০ আসন বিশিষ্ট ১১টি জনজাতি ছাত্রীদের জন্য হোস্টেল এবং ১০টি জনজাতি ছাত্রদের জন্য হোস্টেল নির্মাণ করা হবে। এরজন্য বাজেটে ৭৬ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ের সংস্থান রাখা হয়েছে। এছাড়া ১৫ কোটি ১১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তীর্থমুখ মেলা প্রাঙ্গণের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ হাত নেওয়া হবে। 


মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্ব-শাসিত জেলা পরিষদের উন্নয়নে রাজ্য সরকার টিটিএএডিসি-কে ৬৯৮ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা প্রদান করবে। এই অর্থ পঞ্চম রাজ্য অর্থ কমিশনের টিটিএএডিসি এলাকার ভিলেজ কাউন্সিলের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে পৃথক এবং অতিরিক্ত। জনজাতিদের সার্বিক উন্নয়নে মোট বরাদ্দের ৩৯.৯৩ শতাংশ অর্থ এই বাজেটে ট্রাইবেল সাব প্ল্যানে সংস্থান রাখা হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন ব্লকে কর্মরত সমস্ত বিডিও-দের জন্য ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৭ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয় করে নতুন যানবাহন দেওয়া হবে। পাশাপাশি বর্তমানে রাজ্যের যেখানে বিডিও, অতিরিক্ত বিডিও এবং অতিরিক্ত জেলাশাসক-দের জন্য সরকারি আবাস নেই, সেই সমস্ত স্থানে সরকারি আবাস নির্মান করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার জনস্বাস্থ্যের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।সে দিকে লক্ষ্য রেখেই ২০২৪-২৫ সালের বাজেটে জনস্বাস্থ্যের জন্য ১৩৯.৯৬ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দের সংস্থান রাখা হয়েছে। রাজ্যে 'ল্যান্ড ব্যাঙ্ক' গড়ে তোলার মাধ্যমে অব্যবহৃত জমির উন্নয়ন করে তা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের জন্য লীজ দেওয়া হবে। এই ধরনের সরকারী জমি সংলগ্ন বেসরকারি/ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমিগুলিকে প্রয়োজনে ক্রয় করে সরকারী জমির পাশাপাশি এর উন্নয়নে সরকার উদ্যোগ নেবে। এর জন্য বাজেটে ১০ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। 


মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ২৮৫ কিমি রাস্তার উন্নতিকরণ, ১৯০০ কিমি রাস্তার সংস্কার, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় ৫০০ কিলোমিটার রাস্তার পুনঃসংস্কার এবং ১০টি নতুন আর সি সি ব্রীজ নির্মাণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় ৩০৩ কিলোমিটার রাস্তার উন্নতিকরণের মাধ্যমে ২০টি জনপদে সকল ঋতুর উপযোগী রাস্তা নির্মাণ করা হবে। রাজ্যের ৬০টি বিধানসভা কেন্দ্রে রাস্তার সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে আগামী ৪ বছরে ২,০০০ (দুই হাজার) কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। এর ফলে প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় ৩০ কিলোমিটার নতুন রাস্তা নির্মাণ বা পুনঃসংস্কার করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সেচ ব্যবস্থার উন্নয়নে ৮টি মাইনর ইরিগেশন প্রকল্প নির্মাণ করা হবে। ১১টি লিফট ইরিগেশন প্রকল্প এবং ১৮৩টি গভীর নলকূপ খনন করা হবে। এর ফলে অতিরিক্ত ২৫০০ হেক্টর জমিকে চাষের আওতায় আনা সম্ভব হবে। এর জন্য ব্যয় করা হবে ১১০.৬৪ কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী জনজাতি আদিবাসী ন্যায় মহা অভিযান প্রকল্পে (পিএম-জনমন) সকল আদিম জনজাতি অধ্যুষিত বসতিগুলিতে বৈদ্যুতিকীকরণ করা হবে। মহিলা এবং শিশুদের জন্য পরিচ্ছন্ন শৌচালয় গড়ে তুলতে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ৮৫টি পিংক টয়লেট নির্মাণ করা হবে। এজন্য ব্যয় করা হবে ৭ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা। তাছাড়া ২০২৪-২৫ অর্থ বছরেও প্রতিঘরে সু- শাসন অভিযান চালু থাকবে।




Women Empowerment : প্রজ্ঞা ভবনে ত্রিপুরায় নারী কৃষকদের ক্ষমতায়ন' শীর্ষক সেমিনার

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Bottom Ad