আগরতলা, ০৬ সেপ্টেম্বর : সমাজদ্রোহীদের কোন রাজনৈতিক ও ধর্মীয় পরিচিতি নেই। আইন আইনের পথেই চলবে। কেউই ছাড়া পাবে না। আজ বিধানসভা অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে বিধায়ক ইসলাম উদ্দিন এবং বিধায়ক রামু দাস আনীত একটি দৃষ্টি আকর্ষণী নোটিশের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। দৃষ্টি আকর্ষণী নোটিশটি ছিল "একটি সন্দেহমূলক ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২৫ আগস্ট রাতে জিরানীয়া মহকুমার কৈতরাবাড়ি গ্রামে নিরীহ গ্রামবাসীদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া ও হামলা সংগঠিত করা সম্পর্কে"। এই দৃষ্টি আকর্ষণী নোটিশের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে পুলিশ স্বাধীনভাবে কাজ করছে। যা আগে কখনও দেখা যায়নি। রাজ্যে কখনও সাম্প্রদায়িক সমস্যা ছিল না। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্থদের আইনমাফিক সাহায্য করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এই দৃষ্টি আকর্ষণী নোটিশ নিয়ে আলোচনা করেন বিরোধী দলনেতা বিধায়ক জীতেন্দ্র চৌধুরী, বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ, বিধায়ক ইসলাম উদ্দিন।
আজ বিধানসভা অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে জনস্বার্থে আনা একটি দৃষ্টি আকর্ষনী নোটিশের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা বলেন, গন্ডাতুইসায় গত ৭ জুলাই, ২০২৪ তারিখে ৩০ কার্ড আনন্দমেলা উৎসব প্রাঙ্গণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিতে ত্রাণ প্রদানের জন্য মব লাঞ্চিৎ। মব ভায়োলেন্স প্রকল্পে স্বরাষ্ট্র দপ্তর ধলাই জেলার জেলা শাসককে ১ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকা ইতিমধ্যেই দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকেও ২ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র দপ্তরের বরাদ্দ থেকে ১ কোটি ১২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে বন্টন করা হয়েছে। তাছাড়াও ২ কোটি ৩০ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার ঘোষিত অতিরিক্ত ত্রাণ রাজস্ব দপ্তর থেকে ধলাই জেলা শাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে। বিধায়ক সুদীপ সরকার ও বিধায়ক নয়ন সরকারের আনা দৃষ্টি আকর্ষনী নোটিশটি ছিল "সম্প্রতি গন্ডাতুইসায় একটি অনভিপ্রেত ঘটনাকে কেন্দ্র করে একজন নিরীহ যুবককে খুন ও এই ঘটনার পরবর্তী সময় দেড় শতাধিক বাড়ি, ঘর আক্রমণ, লুটপাট, অগ্নিসংযৌগ ইত্যাদি ঘটনা সম্পর্কে।” এই দৃষ্টি আকর্ষনী নোটিশের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা জানান, গন্ডাতুইসা মহকুমার ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন বাজার, সড়ক, হাসপাতাল, বিদ্যালয়, হিমঘর ইত্যাদি নির্মাণ/ মেরামত ও পরিকাঠামো উন্নয়নে ২৩৯ কোটি ১০ লক্ষ টাকার একটি প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে।
বিধানসভায় এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ঘোষিত প্রকল্পে গন্ডাতুইসা মহকুমার ৪টি সড়কের জন্য ১৭৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হবে। গন্ডাতুইসা মহকুমা হাসপাতালের উন্নয়নে ২৪ কোটি ২০ লক্ষ টকা ব্যয় করা হবে। তাছাড়াও মহকুমায় হিমঘর নির্মাণ ও কেজ ফার্মিং-এর জন্য ডুম্বুর হ্রদের সংস্কারের জন্য ৮কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। মহকুমার ব্যাডমিন্টন ও ফুটবল মাঠের উন্নয়নের জন্য ৮ কোটি টাকা, মহকুমার বিভিন্ন বাজারে স্টল নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকা, মহকুমার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে ৫ কোটি টাকা, রইস্যাবাড়িতে আম চাষিদের জন্য সৌরশক্তি নিয়ন্ত্রিত হিমঘর নির্মাণের জন্য ৩ কোটি টাকা, মহকুমার ১০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পাকা ভবন নির্মাণের জন্য ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা এবং গন্ডাতুইসা বাজার এলাকায় সিসিটিভি বসানোর জন্য ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান এই প্রকল্পগুলির মধ্যে নারায়ণপুর বাজারের ৩০টি মার্কেট স্টল নির্মাণের জন্য ১ কোটি টাকা এবং দশরাম চৌধুরী সুপার মার্কেটের সংস্কার ও উন্নয়নের জন্য ১ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের রাজস্ব দপ্তর থেকে ধলাই জেলার জেলাশাসককে দেওয়া হয়েছে। গন্ডাতুইসা মহকুমার জন্য ঘোষিত প্রকল্পের কাজগুলি দ্রুত বাস্তবায়ণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই ঘটনায় মৃত পরমেশ্বর রিয়াৎ এর পরিবারকে ইতিমধ্যেই ১০ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ১৪৬টি পরিবারের মধ্যে মোট ৩ কোটি ৪৫ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, আমি গত ৪ আগস্ট রাজ্যের মুখ্যসচিবকে নিয়ে গন্ডাতুইসা পরিদর্শনে যাই। তাছাড়াও এই ঘটনায় সাধারণ প্রশাসন থেকে বাস্তুচ্যুত মানুষদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়। পুলিশের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তারও ব্যবস্থা করা হয়।
Teachers Day : টাউনহলে উদযাপিত হলো রাজ্যভিত্তিক শিক্ষক দিবস, "শিক্ষক সম্মাননা-২০২৪" পেলেন ৩৪ জন
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন