আগরতলা, ২৬ মার্চ : শুধু ট্রেজারী বেঞ্চ নয় অধক্ষও বিরোধীদের কণ্ঠস্বর রোধ করছেন। এই অভিযোগ তুলে বুধবার বিধানসভার অধিবেশন থেকে বাকি দিনগুলোর জন্য বয়কট করলো সিপিএম দলের বিধায়করা। এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী একথা জানান । তিনি বলেন বিধানসভার সমস্ত নিয়মাবলী, কার্যসূচি এবং ঐতিহ্যকে লঙ্ঘন করা হচ্ছে। সব দিক বিবেচনায় আজকের দিনটি বিধানসভার জন্য একটি কলঙ্কময় দিন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা বিরোধী দলের সদস্যদের উদ্দেশ্যে বিধানসভার বাকি দিন গুলোতে অধিবেসনে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানান। তিনি আজ বিধানসভায় বিরোধীদের উদ্দশ্যে বলেন , জনগনের স্বার্থে ও গনতন্ত্রকে শক্তিশালী করার স্বার্থে বিরোধীদের সভায় উপস্থিত থাকা প্রয়োজন। তিনি বলেন, যে কোনো ধরনের সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব । প্রসঙ্গত বিরোধী সিপিআই (এম) দলের সদস্যরা অধিবেশনের বাকি দিনগুলো বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অপরদিকে রাজ্য বিধানসভায় আজ তিনটি বিল ধ্বনিভোটে গৃহীত হয়েছে। 'দ্য সোসাইটিস রেজিস্ট্রেশন (ত্রিপুরা অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০২৫ (দ্য ত্রিপুরা বিল নং ৩ অব ২০২৫)' বিলটি সমবায়মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া পেশ করলে সেটি ধূনিভোটে গৃহীত হয়। 'দ্য ত্রিপুরা কো-অপারেটিভ সোসাইটিস (ফিফথ অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০২৫ (দ্য ত্রিপুরা বিল নং ৪ অব ২০২৫)' বিলটি সমবায়মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া সভায় পেশ করেন। এটিও সভায় ধ্বনিভোটে গৃহীত হয়। এছাড়া 'দ্য ত্রিপুরা এক্সাইজ (ফিফথ অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০২৫ (দ্য ত্রিপুরা বিল নং ৫ অব ২০২৫)' বিলটি সভায় অর্থ দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী রতনলাল নাথ পেশ করেন। এই বিলের উপর বিধায়ক গোপাল চন্দ্র রায় সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন। পরে এই বিলটি ধ্বনিভোটে গৃহীত হয়।
বিধানসভার ভিতরে সিপিআইএম দলের সদস্যরা উপস্থিত না থাকলেও যথারীতি চলে বাজেটের উপর আলোচনা। এতে ১০ জন বিধায়ক অংশ নেন। ট্রেজারি বেঞ্চের সদস্য মাইলাফু মগ প্রস্তাবিত বাজেট সমর্থন জানিয়ে বলেন, এই বাজেট জনকল্যাণমুখী। বিধায়ক অন্তরা সরকার দেব প্রস্তাবিত বাজেট সমর্থন জানিয়ে মৎস্যচাষ, প্রাণীপালন, শিক্ষা, পর্যটন প্রভৃতি ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের পরিকল্পনা রূপায়ণের কথা উল্লেখ করেন। বিধায়ক সুশান্ত দেব বলেন, এই বাজেট জনগণের বাজেট ও ঐতিহাসিক বাজেট। রাজ্যকে অগ্রগতির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্যই এই বাজেট তৈরী করা হয়েছে।
বিধায়ক চিত্তরঞ্জন দেববর্মা প্রাস্তাবিত বাজেট সমর্থন জানিয়ে আশা প্রকাশ করেন সারা রাজ্যের উন্নয়নে আগামী বছরগুলিতে বাজেটে অর্থসংস্থানের পরিমাণ আরও বাড়বে। বিধায়ক জীতেন্দ্র মজুমদার কৃষিক্ষেত্র, স্বসহায়ক দল গঠন, এফপিও তৈরী করা প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা করেন। বাজেট সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, বাজেটে জনগণের উপর কোন কর চাপানো হয়নি।
আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট সমর্থন জানিয়ে বিধায়ক কিশোর বর্মণ বলেন, এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার কাজ করছে এবং বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণ করা হচ্ছে। বিধায়ক স্বপ্না দেববর্মা প্রস্তাবিত বাজেটকে সমর্থন জানিয়ে মৎস্যচাষ, প্রাণীসম্পদ বিকাশ, টিটিএএডিসি'র উন্নয়নে রাজ্য সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন।
বিধায়ক স্বপ্না দাস পাল বাজেট সমর্থন জানিয়ে আশা প্রকাশ করেন রাজ্য সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা রূপায়ণের মাধ্যমে রাজ্যের জনগণ উপকৃত হবেন। বিধায়ক স্বপ্না দাস মজুমদার প্রস্তাবিত বাজেট সমর্থন জানিয়ে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প রূপায়ণের কথা তুলে ধরেন। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের বিধায়ক প্রস্তাবিত বাজেটের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে মাহারণী, চাকমাঘাট, মনু ব্যারেজ এর অসমাপ্ত কাজ শেষ করার আহ্বান জানান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন