আগরতলা, ১০ মার্চ : ভারতের নির্বাচন কমিশন আগামী ৩ মাসের মধ্যে চলমান দ্বৈত এপিক নম্বরের সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এক্ষেত্রে যে সমস্ত ভোটারের দ্বৈত এপিক নম্বর রয়েছে তাদের জন্য একটি ইউনিক ন্যাশনাল এপিক নম্বর বরাদ্দ করা হবে। ভবিষ্যতে নতুন ভোটারদের ক্ষেত্রেও এই ব্যবস্থা কার্যকর করা হবে। যদিও এপিক নম্বর যাই হোক না কেন একজন ভোটার শুধুমাত্র তার নির্দিষ্ট ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে পারেন। অন্য কোথাও নয়। ২০০০ সালে এপিক সিরিজ বরাদ্দের সময় কিছু ইআরও সঠিক সিরিজ ব্যবহার করেননি। ফলে বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে দ্বৈত এপিক নম্বর তৈরি হয়েছে। যেহেতু প্রত্যেক রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল স্বতন্ত্রভাবে ভোটার তালিকা পরিচালনা করেছিলো তাই এই সমস্যা তখন চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। নির্বাচন কমিশনের প্রযুক্তিগত দল সংশ্লিষ্ট সিইও-দের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করে আগামী তিনমাসের মধ্যে দীর্ঘদিনের এই সমস্যা সমাধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিশ্বের বৃহত্তম ভোটার ডাটাবেস হলো ভারতের নির্বাচনী তালিকা। যেখানে ৯৯ কোটিরও বেশি নিবন্ধিত ভোটার রয়েছেন। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী তালিকা ক্রমাগত আপডেশন করার পাশাপাশি প্রতি বছর বিশেষ সংক্ষিপ্ত সংশোধনী প্রক্রিয়া পরিচালনা করে, যা সাধারণত অক্টোবর-ডিসেম্বর মাসে হয়ে থাকে এবং জানুয়ারি মাসে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়। যেসব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে নির্বাচন আসন্ন সেখানে নির্বাচনের আগেও বিশেষ সংক্ষিপ্ত সংশোধনী হয়ে থাকে। সম্প্রতি বিশেষ সংক্ষিপ্ত সংশোধনী-২০২৫-এর জন্য সূচি ৭ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে প্রকাশিত হয়েছিলো এবং ৬-১০ জানুয়ারি, ২০২৫-এর মধ্যে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়। ভোটার তালিকা তৈরি করতে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক এই প্রক্রিয়ায় ইআরও রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের মধ্য থেকে প্রতি বুথের জন্য একজন করে বিএলও নিযুক্ত করেন। প্রতিটি বুথে রাজনৈতিক দলগুলিও বুথ লেভেল এজেন্ট (বিএলএ) নিয়োগ করতে পারে। সমস্ত বুথ লেভেল এজেন্টদের (বিএলএ) সংশ্লিষ্ট বুথের ভোটার তালিকা যাচাই করার এবং কোনও ত্রুটি থাকলে অভিযোগ জানানোর অধিকার আছে। বিএলও দ্বারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে যাচাইয়ের পর সংশ্লিষ্ট ইআরও-এর কাছে সুপারিশ জমা দেওয়া হয়। এই সমস্ত তথ্য যাচাই করার পর ইআরও ভোটার তালিকা আপডেটেশনের জন্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়।
এরপর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয় এবং রাজনৈতিক দল ও জনগণের জন্য উপলব্ধ করা হয়। প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকা যাচাই ও আপত্তি নিষ্পত্তির জন্য এক মাসের সময় দেওয়া হয়। এরপর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। যদি কোনও ব্যক্তির আপত্তি থাকে তাহলে তিনি আরপি অ্যাক্ট, ১৯৫০-এর ২৪-(এ) ধারার অধীনে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। জেলা কালেক্টর। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে প্রথম আপিল করতে পারেন। প্রথম আপিলের সিদ্ধান্ত সন্তোষজনক না হলে সংশ্লিষ্ট রাজ্য / কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) আরপি অ্যাক্ট, ১৯৫০-এর ২৪ ধারার অধীনে দ্বিতীয় আপিল করতে পারবেন। ভারতের নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এক প্রেস নোটে এই সংবাদ জানানো হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন