আগরতলা, ২৬ সেপ্টেম্বর : দেশ এখন প্রগতির পথে এগিয়ে চলেছে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর আমাদের দেশ এখন প্রগতির পথে এগিয়ে চলেছে। ব্যাপক উন্নতি হয়েছে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিরও। আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীগণ উত্তর পূর্বাঞ্চলে বিশেষ আসতেন না। গত ছয় বছরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীগণ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও অনেকবার এই অঞ্চলের রাজ্যগুলোতে এসেছেন। গত ছয় বছরে ত্রিপুরাও বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভুত উন্নতি করেছে। আজ পশ্চিম ত্রিপুরা জেলাশাসকের কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি একথা বলেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ত্রিপুরায় রেগার বরাদ্দের প্রায় ৯০ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয়েছে। সৃষ্টি করা হয়েছে বিভিন্ন সম্পদ। ত্রিপুরা এখন উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি ২০১৪ সালে কেন্দ্রে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠার পর থেকে ত্রিপুরার উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় অর্থ বরাদ্দের তুলনামূলক চিত্রও তুলে ধরেন। সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০০৬ থেকে ২০১৩-১৪ পর্যন্ত রেগায় ত্রিপুরা পেয়েছিল ৪,৫৫৮ কোটি টাকা। নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর রেগায় ত্রিপুরার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৮,৩৫১ কোটি টাকা। ২০০৬ থেকে ১৪ সাল পর্যন্ত তৎকালীন ইন্দিরা আবাস যোজনায় ত্রিপুরায় ১ লক্ষ ৪ হাজার ৯৭০টি আবাস নির্মাণ করা হয়েছিল। গত ৯ বছরে নির্মাণ করা হয়েছে ২ লক্ষ ৯৪ হাজার ৯১১টি আবাস। গরীব অংশের মানুষকে শুধু আবাসই তৈরী করে দেওয়া হয়নি সাথে শৌচালয়, রান্নার গ্যাসের সংযোগ, পানীয় জলের সংযোগও দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় ত্রিপুরার বরাদ্দের কথাও তুলে ধরেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনা অতিমারির সময়ে আমাদের দেশেও অনেকে কর্মহীন হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের জন্য বিনামূল্যে রেশনের ব্যবস্থা করেছেন। কর্মসংস্থানের জন্য রেগায় বরাদ্দ বাড়িয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বেই করোনা অভিমারি সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে। প্রসঙ্গক্রমে তিনি চন্দ্রায়ণ ও অতি সম্প্রতি সংসদে পাশ হওয়া নারী সংরক্ষণ বিলের কথাও তুলে ধরেন। সাংবাদিক সম্মেলনে গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সচিব সন্দিপ আর রাঠোর ও পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক দেবপ্রিয় বর্ধন উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে আজ মোহনপুর ব্লকের মোহিনীপুর পঞ্চায়েত প্রাঙ্গণে স্বসহায়ক দলের সদস্যাদের সাথে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি। উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত অফিস প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার ৭টি স্বসহায়ক দল তাদের উৎপাদিত সামগ্রী নিয়ে প্রদর্শনী স্টলও খুলেছে।
স্বসহায়ক দলের সদস্যাদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরায় উন্নয়নের ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলছে। এই রাজ্যেরও যোগাযোগ ব্যবস্থায় অনেক উন্নতি হয়েছে। দেশকে আত্মনির্ভর করে গড়ে তোলার কাজে স্বসহায়ক দলের সদস্যাদের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। এজন্য শুধুমাত্র মহিলাদের নিয়ে অনেকগুলি স্বসহায়ক দল গঠন করা হয়েছে। ত্রিপুরার স্বসহায়ক দলগুলির ভূমিকার প্রশংসা করে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরার অনেক স্বসহায়ক দল তাদের উৎপাদিত সামগ্রী নিয়ে দিল্লির প্রগতি ময়দানে আয়োজিত স্বসহায়ক দলের অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। তাদের উৎপাদিত সামগ্রী ব্যাপক অংশের মানুষের কাছে প্রশংসাও পেয়েছে। অনুষ্ঠানে গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী স্বসহায়ক দলের সদস্যাদের উৎপাদিত সামগ্রীর প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন।
কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি এদিন মোহনপুর ব্লকের রাঙ্গাছড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে অমৃত সরোবরের উদ্বোধন করেন। তাছাড়াও তিনি ব্লকের মোহিনীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় (গ্রামীণ) নির্মিত জিতেন্দ্র সূত্রধরের বাড়ির গৃহপ্রবেশ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। মতবিনিময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মোহনপুর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান রীণা দেববর্মা, ভাইস চেয়ারম্যান রাকেশ দেব, গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সচিব ড. সন্দীপ আর রাঠোর, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক দেবপ্রিয় বর্ধন, মোহনপুর মহকুমার মহকুমা শাসক সুভাষ দত্ত, মোহনপুরের বিডিও নারায়ণ চন্দ্র মজুমদার প্রমুখ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন