আগরতলা, ১৫ সেপ্টেম্বর : রাজ্য সরকারের বন্যা ত্রাণ প্যাকেজে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরকে ১২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। আজ আগরতলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেন শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি আরও জানান, বন্যায় রাজ্যে ৮৬১টি বিদ্যালয় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে ১৯৪টি নিম্নবুনিয়াদি, ২৭৪টি উচ্চবুনিয়াদি, ৩৩২টি দ্বাদশ শ্রেণী এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহ ৬১টি বিভিন্নস্তরের শিক্ষা কার্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরফলে মোট ২৬২ কোটি ৮ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার বলেন, এবারের বন্যায় ৩ জন শিক্ষার্থী প্রাণ হারায়। তাছাড়া বন্যায় প্রায় ৮৫ হাজার বই, বিভিন্ন বিদ্যালয়ের কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মিড ডে মিলের খাদ্যসামগ্রী, আসবাবপত্র, যন্ত্রপাতি সহ কিছু কিছু বিদ্যালয়ের পরিকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, যে সকল শিক্ষার্থীর বই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদেরকে ইতিমধ্যে ২১,৫৫২টি বই বিতরণ করা হয়েছে। বর্তমানে কোনও বিদ্যালয়ে ত্রাণ শিবির কার্যরত নেই। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১,৩৪১টি বিদ্যালয়ের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং ১,৩৪৭টি বিদ্যালয়ে জীবাণুনাশক কর্মসূচি সম্পন্ন করা হয়েছে। তাছাড়াও তিনি বলেন, বর্তমানে প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ে সূচারু রূপে ক্লাশ চলছে এবং ছাত্রছাত্রীরাও যথেষ্ট মাত্রায় উপস্থিত রয়েছে। উচ্চশিক্ষা দপ্তর নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি জানান, বকাফা পাবলিক লাইব্রেরি এবং দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলা পাবলিক লাইব্রেরি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরফলে প্রায় ৮ হাজার বই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও বিলোনীয়ার ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কলেজের সীমানার দেওয়াল, মোহনপুরের স্বামী বিবেকানন্দ মহাবিদ্যালয়ের রাস্তা, হাঁপানিয়ার উইমেন্স পলিটেকনিক কলেজের বাউন্ডারি ওয়াল ও রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ ২ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকা।
সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার ষ জানান। অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে রাজ্যের ন্যায্যমূল্যের দোকান থেকে প্রতি রেশন কার্ডপিছু অতিরিক্ত ১০ কেজি চাল বিনামূল্যে দেওয়া হবে। রাজ্য সরকারের বন্যা ত্রাণ প্যাকেজে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, এজন্য রাজ্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৭০ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে বিশেষ সচিব আরও জানান, বন্যায় ৭৯টি রেশন দোকান, ১১টি খাদ্য গুদাম এবং মজুতকৃত ১৬০ মেট্রিকটন চাল, ৯ মেট্রিকটন আটা, ৮ মেট্রিকটন মসুর ডাল, প্রায় ১২ মেট্রিকটন লবণ এবং ১.৫ মেট্রিকটন চিনি নষ্ট হয়েছে। এরফলে মোট ক্ষতি ১ কোটি ২২ লক্ষ টাকা। খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার আরও বলেন, বন্যায় যে সকল খাদ্য সামগ্রী নষ্ট হয়েছে তা নিয়ম মেনে ইতিমধ্যেই ডাম্পিং করা হয়েছে। বিশেষ সচিব আরও জানান, বর্তমানে রাজ্যে ৭৪ দিনের চাল, ৬৭ দিনের আটা, ২০ দিনের লবণ, ৭ দিনের পেট্রোল, ৬ দিনের ডিজেল, ২০ দিনের কেরোসিন পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত রয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের অধিকর্তা নির্মল অধিকারী, বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা নৃপেন্দ্র চন্দ্র শর্মা, উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা অনিমেষ দেববর্মা প্রমুখ।
Blood Donation : মহানাম অঙ্গনের উদ্যোগে রক্তদান শিবিরে মুখ্যমন্ত্রী ও পর্যটন মন্ত্রী
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন